কুমিল্লায় ৪৬৬টি পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী ঘর উপহার প্রদান

এই ঈদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর উপহার পেলেন কুমিল্লার ৪৬৬ টি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবার। আজ ২৬ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সারা দেশের মতো কুমিল্লার উপকারভোগীদেরও চাবি হস্তার করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে গতকাল সোমবার বিকালেই সংবাদ সম্মেলন করে এসব ঘর হস্তান্তরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার কথা জানান কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান,  মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে “দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেন না”- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের অনবদ্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের জন্য কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলায় ১৭৪২ জন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলায় ৩য় পর্যায়ে ৪৬৬ জন গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতক ভূমির মালিকানাসহ রঙিন টিনশেডের সেমিপাকা ঘর প্রদান করার কথা জানান জেলা প্রশাাসক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঈদে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে জেলার  ৪৬৬টি পরিবারের মাঝে ঘর প্রদান করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে জেলার মুরাদনগর উপজেলায়। এই পর্যায়ে মুরাদনগর উপজেলায় ৫০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে উপকারভোগীদের মাঝে।
এর মধ্যে আদর্শ সদর উপজেলায় ১৫ পরিবার, সদর দক্ষিণ উপজেলায় ২০টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২০টি, নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৩২ টি, লাকসাম উপজেলায় ৩৮টি, মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ১৬টি, লালমাই উপজেলায় ১০টি, বরুড়া উপজেলায় ২৭টি, চান্দিনা উপজেলায় ৩২টি, দাউদকান্দি উপজেলায় ৭৮টি, মেঘনা উপজেলায় ২২ টি, তিতাস উপজেলায় ২২ টি, হোমনা উপজেলায় ২৪টি, দেবিদ্বার উপজেলায় ৩০টি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ৩০টি ও বুড়িচং উপজেলায় ৬ টি।

সবচেয়ে বেশি বরাদ্ধ পাওয়া উপজেলা মুরাদনগরের নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, কুমিল্লা জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা মুরাদনগর উপজেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ঘরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ছাপ্পান্নটি দ্বিতীয় পর্যায়ে ২৫০ টি সহ ৩০৬ ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হয়। যা ইতিমধ্যে হস্তান্তরও করা হয়েছে। উক্ত উপকারভোগীদের দলিল সম্পাদন সহ নামজারী ও জমাভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি প্রদান করা হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ, ব্যবস্থা করা হয়েছে পানীয় জলের। ইউএনও বলেন, এখন তারা দিনবদলের স্বপ্নে বিভোর।

প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ধারাবাহিকতায় তৃতীয় পর্যায়ে আরো ১৫৮ টি ঘরের  পাওয়া যায় এর মধ্যে প্রথম ধাপে পঞ্চাশটি ঘরের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে এর মধ্যে যাত্রাপুর ইউনিয়নের চৌদ্দটি পূর্বধইর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ষোলটি এবং ধামঘর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুরে বৃষ্টি ঘর নির্মিত হয়েছে। ইউএনও জানান, এপর্যায়ে ঈদকে সামনে রেখে ২৬ তারিখ প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের ন্যায় মুরাদনগর উপজেলার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের হস্তান্তর করেন ৫০ টি ঘর।

ইউএনও অভিষেক দাস জানান, নির্মাণাধীন রয়েছে আরও একশো আটটি ঘর ধারাবাহিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে যে উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এমন একটি সাহসী প্রকল্পকে উপযুক্ত নির্দেশনা দিয়ে সফল করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি, মুরাদনগরের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম কিশোরসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সোমবার বিকেলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ কুমিল্লার উপ-পরিচালক শওকত উসমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ শাখাওয়াত হোসেন রুবেল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ) মোঃ কাবিরুল ইসলাম খান, আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিনসহ অন্যান্যরা।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ২৬ এপ্রিল ২০২২

Share