সারাদেশ

কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে যা বললেন এমপি সীমা

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী টাউন হল নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন কুমিল্লার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজাল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি রোববাবর দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান কালে টাউন হলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

এর আগে ঐতিহ্যবাহী টাউন হল ভেঙ্গে আধূনিক ভবন নির্মাণে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহারের এক উদ্যোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সংস্কৃতি অঙ্গণে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৯ ডিসেম্বর টাউন হলটি ভাঙ্গা হবে কি-না এ নিয়ে একটি গণশুনানী অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে গত ৩ ডিসেম্বর কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার এক সংবাদ সম্মেলন করে ঐতিহ্যবাহী টাউন হল ভেঙ্গে আধূনিক ভবন নির্মাণে সাংবাদিকসহ কুমিল্লার সর্বস্তরের জনগণের সমর্থন প্রত্যাশা করেন।

এসময় তিনি কুমিল্লার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজাল খান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সামনে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

এসবের প্রতিবাদে ১৩ ডিসেম্বর রোববার দুপুরে ওই সংবাদ সম্মেলনেরই পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা।

নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, ১৩৫ বছরের ঐতিহ্যে লালিত স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন কুমিল্লার টাউন হল। তিনি (বাহার) এমপি হওয়ার ১২তম বছরে এসে আবিস্কার করলেন এটি বড়ই মলিন-জরাজীর্ণ, তাই কুমিল্লার উন্নয়নের জন্য এটাকে ভেঙে নতুন করে করতে হবে! আরও দশটা কর্মকান্ডের মতো এখানেও তার বাণিজ্যিক মিশণ ও লাভালাভের বিষয় জড়িত।

এমপি সীমা বলেন, শুনেছি ভবনটি পুরার্কীর্তি হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে কিনা এনিয়ে গণশুনানী হবে। ঐহিত্য নিয়ে গণশুনানী, এটা কেমন কথা?

এ সময় সীমার ভাই কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এফবিসিসিআই-এর পরিচালক মাসুদ পারভেজ ইমরানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে মর্ডাণ স্কুল নিয়ে এমপি সীমা বলেন, তালিকাভুক্ত অস্ত্রবাজ, সন্ত্রাসী ও ক্যাডার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এমপি বাহার সাহেব দখলযজ্ঞে মেতে উঠেছেন। আমার বাবা অধ্যক্ষ আফজাল খান অ্যাডভোকেট তিলতিল করে মর্ডাণ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০১৫ সালে রোজার মাসে স্কুল বন্ধ থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৎকালীন ডিজিকে দিয়ে নামমাত্র একটা তদন্ত করে স্কুল কমিটি ও প্রধান শিক্ষকককে সরিয়ে এবং উনার নিজের লোক দিয়ে একটি অবৈধ কমিটি করিয়ে স্কুলটি দখল করে নেন তিনি। তিনি গত ৩ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন আমার বাবা ও মা স্কুলের ৩০/৪০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যমূলক।

যুবলীগ কর্মী জিল্লুর হত্যার প্রসঙ্গে এমপি সীমা বলেন, জিল্লুর হত্যা মামলার আসামিরা বীরদর্পে কুমিল্লা শহরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার করছে না। আমাদের সংসদ সদস্য (এমপি বাহার) এই হত্যাকারীদের প্রটেকশন দিচ্ছেন। এই হত্যাকাÐ নিয়ে তিনি অসত্যের আশ্রয় নিয়েছেন। বিশেষ মহল এই নির্মম হত্যাকাÐটি ধামাচাপা দিতে চাইছেন।

গত ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ আফজাল খান ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বিষোদগার করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আমার সকল রাজনৈতিক কর্মকাÐ আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে করেছি।

যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন রাজনৈতিক কারণে আমি দুর্নীতি করেছি, ব্যক্তিগত জীবনে কারও সম্পদের প্রতি লোভ লালসা করেছি, তাহলে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করে বাড়ি চলে যাবো। আমি এখনো সততার সাথে রাজনীতি করি। সমস্ত লোভ-লালসাকে বিবর্জন করেই রাজনীতি করি।

প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,১৩ ডিসেম্বর ২০২০

Share