কুমিল্লার বুড়িচং থানার ঘোষনগর এলাকায় চাঞ্চল্যকর নির্মাণশ্রমিক শের আলী হত্যা মামলার এজহারভুক্ত প্রধান আসামী মো. সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে বুড়িচং থানা পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বুড়িচং থানার সাবইন্সপেক্টর ইমাম হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে জানান, “দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের সূত্র ধরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকা থেকে বিকাশের ফাঁদ পেতে আসামী সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মনিপুর গ্রামের মৃত হাছন আলীর ছেলে শের আলী বেশ কিছুদিন ধরে ময়নামতির ঘোষনগর গ্রামে ভাড়া থাকতেন। গত ২৩ জুন বিদ্যুতের ক্যাবল দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে শের আলীকে পিটিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।
সম্প্রতি মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে মামলার প্রধান আসামী সুজন সিলেটে অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে এস আই ইমাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ গত সোমবার সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানাধীন মানিক কোনা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী সুজনকে গ্রেফতার করে।
আটক সুজন মিয়া কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিসের আওতাধীন একটি আমের বাগান লীজ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। ওই বাগানের আম বিক্রির টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধের জের ধরে জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়।
এ ব্যাপারে আটক সুজন সাংবাদিকদের জানান, “মৃত শের আলী এবং তার ভাই জহির ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নির্মাণাধীন মার্কেটে ঠিকাধারী ভিত্তিতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতো। হত্যাকান্ডের আগে মামলার এজাহারভুক্ত তিন নং আসামী হামজা সিকদারের সাথে ঠিকাদারী ভিত্তিতে শ্রমিকের কাজের টাকার দর দাম নিয়ে শের আলী এবং তার ভাই জহিরের সাথে বিরোধ চলে আসিছিলো। কারণ কম দর দেয়ার কারণে মৃত শের আলী মার্কেটের কাজটি পেয়ে যায়। এতে তার বড় ভাই জহিরের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এসব কারণেই হত্যাকান্ড সংগঠিত হতে পারে” বলে সে জানায়।
শের আলীকে হত্যা করতে হামজা শিকদার সুজনকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছে’ আদালত, পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে এধরনের তথ্য দেয়ার জন্যে নিহত শের আলীর ভাই জহির আটক সুজনকে বার বার চাপ প্রয়োগ করছেন বলেও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন আটক সুজন।
সুজন জানায়, সে থানা হাজতে থাকা অবস্থায় এবং তাকে সিলেট থেকে আটক করে নিয়ে আসার সময় নিহত শের আলীর ভাই জহির সুজনকে বারবার হামজা শিকদারের প্রতি দোষ চাপিয়ে দেয়ার জন্যে চাপ দেয় এবং জহির সুজনকে বলে- তুমাকেতো সারা জীবন আটক করে রাখলেও কোন টাকা পয়সা বের হবে না। কিন্তু হামজা সিকদারের নাম বললে তার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। সুজন বলেন, হামজা শিকদারের মতো একজন ভালো লোকের নামে এমন ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আমি কখনোই করতে পারবো না।
প্রসঙ্গত গত ২৩ জুন বিদ্যুতের ক্যাবল দিয়ে হাত পা বেঁধে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে শের আলীকে পিটিয়ে নির্যাতন করে হত্য করা হয় তাকে। পরে নিহতের বড় ভাই বাবুল মিয়া ওই দিন রাতে বাদী হয়ে ঘোষনগর গ্রামের মোঃ মালেক হাবিলদারের ছেলে মোঃ সুজন মিয়াসহ (২৬) তিনজনকে আসামী করে অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
আটক সুজনকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে কুমিল্লা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur