শীর্ষ সংবাদ

কুমিল্লায় নবজাতককে ফেলে আসার রহস্য জানালেন হাজীগঞ্জের সেই দম্পতি

কুমিল্লায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অসুস্থ নবজাতককে চিকিৎসা দিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের বিল পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছিল এক দম্পতি। ফলে গাঢাকা দিয়েছিল দরিদ্র ওই দম্পতি। কিন্তু এই নিয়ে হইচই পড়লে শেষ পর্যন্ত তাদের সন্ধান পাওয়া যায়। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বালিকা ইউনিয়নের ফুলছোঁয়া গ্রামে তাঁদের বাড়ি।

এরা হচ্ছেন- দিনমজুর শাহ আলম ও তাঁর স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এর আগে গত ২৮ আগস্ট অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া নবজাতককে নিয়ে কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা এলাকার কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইড হাসপাতাল নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে যান এই দম্পতি। পরে চিকিৎসা খরচ মোটা অঙ্কের হওয়ায় তারা নবজাতককে রেখেই গাঢাকা দেন।

এ সম্পর্কে মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে শাহ আলম জানান, হাসপাতালের লোকজন তাকে বলেছিল মাত্র ৫-৭ হাজার টাকার মধ্যে শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব। তাই সেখানে ভর্তি করেছি। কিন্তু দুইদিন থাকার পর তারা আমার কাছে ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। তাই বাচ্চাকে রেখে বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামে চলে আসি।

হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ জানান, খেটে খাওয়া দিনমজুর শাহ আলম হাসপাতালের খরচের কথা শুনে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি চলে আসেন।

তিনি আরো জানান, ইউনিয়ন পরিষদ ও বিভিন্নজনের কাছ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছি। এই টাকা নিয়ে আজ বুধবার স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ তাকে কুমিল্লা পাঠানো হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আশ্বস্ত করেছে, ন্যুনতম খরচ রেখেই শিশুটিকে বাবা-মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হবে।

শাহ আলমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, এর আগে অপরিণত বয়সে তাঁর আরো কয়েকটি সন্তান জন্ম নিয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসার অভাবে তাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, অপরিণত বয়সের বাচ্চাদের অল্প খরচে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা যায়, এমন কথায় প্রলুব্ধ হয়ে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে তারা কুমিল্লার ওই হাসপাতালে যান।

এদিকে, কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বদিউল আলম জানান, আমরা তো জোর করে তাদের কাছে বাড়তি কিছু দাবি করিনি। কেবলমাত্র খরচের টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু নবজাতকটিকে রেখে না বলেই তারা চলে গেছেন। তাই বলে তো ওকে চিকিৎসা ছাড়া ফেলে রাখতে পারি না।

অন্যদিকে, কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মজিবুল হক জানান, এই নবজাতককে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ সেপ্টেম্বর নবজাতক ছেলেকে হাসপাতালে রেখেই পালিয়েছেন হাজীগঞ্জের মা-বাবা শিরোনামে চাঁদপুর টাইমসসহ একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক তোলপাড় হয়। পরে বিষয়টি ওই দম্পতির এলাকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তাদের সন্ধান মিলে।

এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদন- নবজাতক ছেলেকে হাসপাতালে রেখেই পালিয়েছেন হাজীগঞ্জের মা-বাবা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

Share