কুমিল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ৩ দিন ধরে ঘিরে রাখা বাড়ি থেকে কোন জঙ্গি নয় বরং মিলেছে গ্রেনেড, বিভিন্ন ধরণের বিস্ফোরক ও সুইসাইডাল ভেস্ট।
কুমিল্লা নগরীর কোটবাড়ি সংলগ্ন দক্ষিণ বাগমারা এলাকার একটি ৩ তলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার বিকাল পৌনে ৬টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম। তবে ওই কক্ষে প্রচুর গ্যাস থাকায় শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রেস বিফ্রিংয়ে ডিআইজি জানান, তাদের নিকট তথ্য ছিল ওই বাড়িতে নোয়াখালীর আনিস ওরফে আনাস (১৯) এবং রাজশাহীর (মতান্তরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ) রনি (২২) অবস্থান করছে। কিন্তু বুধবার দুপুরে র্যাব-পুলিশ ওই ভবন ঘিরে ফেলার আগেই জঙ্গিরা কৌশলে পালিয়ে যায়। তাই তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। ওই বাড়ির একটি কক্ষ থেকে ৪টি গ্রেনেড, ৫ কেজি ওজনের ২টি বোমা এবং ২টি সুইসাইডাল ভেস্ট পাওয়া গেছে। কিন্তু ওই কক্ষে প্রচুর গ্যাস থাকায় এ গুলো উদ্ধার কিংবা নিস্ক্রিয় করা যায়নি।
শনিবার সকালে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এসব বোমা ও গ্রেনেড নিস্ক্রিয় করবেন। এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে ‘স্ট্রাইক আউট’ নামের অভিযানটি শুরু হয়। সোয়াত, র্যাব, ক্রাইম সিন ইউনিট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্য, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সেখানে পৌঁছে জঙ্গিদের অচেতন করতে পাইপের মাধ্যমে কক্ষে গ্যাস প্রবেশ করান এবং কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ও প্রায় ১০০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। গ্যাসের প্রভাব কমতে তাদের দুই ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফায়ার সার্ভিসে সাহায্যে ৩তলার ছাদে উঠে অভিযান চালিয়ে নিচতলায় আসা হয়।
ডিআইজি আরো জানান, বাড়ির মালিক দেলোয়ার হোসেন তাদের জানিয়েছেন আনিস ও রনি গেঞ্জি ব্যবসায়ী পরিচয়ে এ বাড়িতে উঠেছিলো। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একজন বেরিয়ে যায়, অন্যজন তখন ঘুমিয়ে ছিলো। সম্ভবত আগে বেরিয়ে যাওয়া ব্যক্তির তথ্যমতে ভেতরে অবস্থানকারীও সরে পড়ে। বাড়িটি বুধবার বিকালে শনাক্ত করে পুলিশ। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানা থেকে আটকদের কাছ থেকে এই দুইজনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে।
সকাল থেকে ঘটনাস্থলের পাশের প্রায় ২ কি.মি. এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এলাকার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। প্রেস বিফ্রিংয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি মো. সাখাওয়াত হোসেন ও কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য- এক জঙ্গির দেওয়া তথ্য মতে গত বুধবার দুপুরে দিকে জঙ্গির অবস্থানের সন্দেহে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার দক্ষিণ বাগমারা এলাকার একটি ৩ তলা বাড়ির সকল ভাড়াটিয়াদের বের করে এনে বাড়িটি নিয়ন্ত্রণ নেয় র্যাব, পুলিশ। তলব করা হয় সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। কিন্তু ৩ দিনের অভিযানে পাওয়া ধরা পড়েনি কোনো জঙ্গি।
ওই এলাকায় ৩ দিনের এ অভিযানকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে কুসিক নির্বাচনের কারণে বৃহস্পতিবার অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল।
নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ৫৭ পিএম, ৩১ মার্চ ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur