কুমিল্লার হোমনা উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামান্য মারামারির ঘটনায় ২০২০ সালের ৮ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের বহিস্কার করার জন্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
তবে এ ঘটনায় অভিভাবকরা বলছেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এভাবে ৮ জন শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা অমানবিক। এতে ওই ছাত্রদের শিক্ষা জীবন ধ্বংসের
আশংকা রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কলাগাছিয়া এম এ উচ্চ বিদ্যালয়ে।
সোমবার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুর রব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ওই আট ছাত্রকে বহিস্কার করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ১৫ নভেম্বর বিদ্যালয়ের দমশ শ্রেণির কক্ষে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেদের হৈ চৈ শুনে কয়েকজন শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষক দৌঁড়ে গিয়ে দেখতে পান কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে হাতাহাতি, মারামারি হচ্ছে। এতে মেহেদি নামের এক ছাত্রের হাতে আঘাত লেগে ভেঙ্গে যায়। পরে শিক্ষকরা বিষয়টি অভিভাবকদের জানায়।
প্রধান শিক্ষক মো.আবদুর রব বলেন, এরই মধ্যে ইউএনও স্যার ঘটনা শুনে আমাকে ফোন করলে আমি স্যারকে বিষয়টির বিস্তারিত জানাই। এরপর গত ২১ নভেম্বর তারিখে তিনি আটজন পরীক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করার জন্য আমার কাছে অফিসিয়াল চিঠি দেয়। ছোট্ট একটি ঘটনায় এতো বড় শাস্তি আর দেখেনি।
তবে ইউএনও স্যার আমাদের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, এখানে আমার কিছু বলার নেই। আর চিঠিতে বলা হয়েছে নির্দেশনামতো ছাত্রদের বহিস্কার করা না হলে আমাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
সর্বশেষ রোববার (২৪ নভেম্বর) বিদ্যালয় থেকে ওই আটজন শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা হয়। তারা হলেন; আমজাদ হোসেন, মানিক, হারুনুর রশীদ, রফিকুল ইসলাম, রিফাত মোল্লা, নাঈম হোসেন, জাহিদ হোসেন ও পারভেজ।
এদিকে, এ ঘটনায় সামসুল হক নামের এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্ররা একসাথে লেখাপড়া করে, তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি বা ঝগড়া বিবাদ হতেই পারে। তার বিচার শিক্ষকরা আমাদের অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে করতে পারেন। তাই বলে কি সরাসরি বহিস্কার করে দিবে ইউএনও। এটা কেমন কথা?
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে বহিস্কার সংক্রান্ত কোন চিঠি আমি পাইনি। এছাড়া ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য যারা ফরম ফিলাপ করেছে এর মধ্যে কে পরীক্ষা দিতে পারবে, কে পারবে না সেটা আসলে সিদ্ধান্ত দিবে বোর্ড। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপ্তি চাকমা ফোনে বলেন, বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে এবং পরীক্ষার খাতা দেখে তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছি। এ কথা বলেই কল কেটে দেন তিনি।
প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল