চাঁদপুর

এবার চাঁদপুর স্টেডিয়ামেই হচ্ছে হারানো ঐতিহ্য গ্রামীণ খেলাধুলা

দেশের অন্যান্য জেলা ন্যায় নদীবিদৌত ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর জেলা থেকেও হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীনসব খেলা-ধুলা।

একটা সময় জেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলে শতাধিক গ্রামীন খেলা-ধুলার প্রচলন ছিল। যার মধ্যে ছেলেদের উল্লেখযোগ্য খেলা ছিলো, হা-ডু-ডু, ডাংগুলি, কাবাডি, গোল্লাছুট, দৌড়-ঝাঁপ, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, ডুব সাঁতার, নৌকাবাইচ, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, হৈল বৈল, বস্তাদৌড়, লুকোচুরিসহ অনেক খেলা।

আর মেয়েরা খেলত দাঁড়িয়াবাঁধা, গোল্লাছুট, এক্কাদোক্কা, পাঁচগুটি, চোরপুলিশ, বৌচি, কিতর্কিত, কড়ি খেলা, বালিশ বদল, লুকোচুরি, পুতুল খেলা, রান্নাবাটিসহ নানান খেলা। কিন্তু কালের আবর্তে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাগুলোর মধ্যে বর্তমানে বেশিরভাগই এখন বিলুপ্তির পথে। তবে গ্রামীণ জনপদে এখনও কিছু কিছু খেলা-ধুলা চোখে পড়লেও উৎসাহ-উদ্দীপনা ও সাহায্য-সহযোগিতার অভাবে তাও বন্ধ হতে চলেছে।

গ্রাম বাংলার এসব খেলাধুলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের একান্ত উদ্যোগ এবং নির্দেশে আগামী অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী গ্রামীণ খেলাধুলা-২০১৮।

সপ্তাহব্যাপী এই ক্রিড়াকর্মকান্ডের আয়োজনে রয়েছে চাঁদপুর জেলা ক্রড়া সংস্থা। সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত গ্রামীণ খেলাধুলার ইভেন্টগুলো হলো, (১) দড়ি লাফ, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণীর বালক ও বালিকা, (২) মেরগ লড়াই, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণীর বালক ও বালিকা, (৩) হাড়িভাঙ্গা ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণীর বালিকা, (৪) ঘুড়ি উড়ানো, শুধুমাত্র ৯ম থেকে ১০ম শ্রেণীর বালক, (৫) অংক দৌড়, শুধুমাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণীর বালিকা, (৬) ব্যাঙ লাফ শুধুমাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণীর বালক, (৭) সাইকেল র‌্যালি, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণীর বালক (৮) চেয়ার দখল, শুধুমাত্র মহিলা অভিভাবকদের জন্য।

চাঁদপুর জেলা ক্রড়া সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানানো হয়, উল্লেখিত ইভেন্টগুলোতে অংশ গ্রহনের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বিকেল ৫টার মধ্যে প্রতি ইভেন্টে কমপক্ষে ৫জন করে বালক ও বালিকা খেলোয়াড়ের নামের তালিকাসহ অংশগ্রহনের সম্মতিপত্রসহ জেলা ক্রড়া সংস্থার অফিসে প্রেরনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা ক্রড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান স্যারের একান্ত উদ্যোগ এবং নির্দেশে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলাধুলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এই আয়োজন করা হয়েছে। আগামি অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই ক্রিড়াকর্ম শুরু হবে। এতে অংশ নেয়ার জন্য এরইমধ্যেই আমরা চাঁদপুর সদর উপজেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি প্রেরণ করেছি। ইতিমধ্যে লিফলেট বিতরণও শুরু হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, তবে দুঃখের কথা হলো চিঠি প্রেরণের পরেও আমরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তেমন একটা সাড়া বা সহযোগিতা পাইনি।

এ বিষয়ে  চাঁদপুর টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদন- ক্রিকেট-ফুটবলের মাতামাতিতে গ্রামীণ খেলা এখন যেনো রূপকথা

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম

Share