প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০১৫ ১৪:১২
জাহিদুর রহমান তারিক :
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় দীর্ঘদিনের অবৈধ প্রেমের ফসল কুমারী মাতার সন্তান প্রসব। এরপর এ সন্তানকে অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হয়।
অবৈধ প্রেমের ফসল এ সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতককে হত্যা করেছে একটি সন্ত্রাসী গ্যাং গ্রুপ। তারা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রেমের সম্পর্ক ধরে জন্ম নেয়া নবজাতকের প্রকৃত পিতার রহস্য ধাম চাপা দিতে উদোর পিন্ডি-বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি উঠেছে।
উপজেলার বাগুটিয়া গ্রামের তালেব মোল্ল¬ার মেয়ে পারভিন আক্তারের প্রেম, সন্তান প্রসব, হত্যা অতঃপর তাকে বিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে ছড়িয়েছে নানা কথা। তার গর্ভের সন্তানের প্রকৃত পিতা কে, কেনই বা তাকে হত্যা করা হলো, কে করল হত্যা শেষ পর্যন্ত মেয়েটির সাথে গ্রাম্য সালিশে কাকে বিয়ে দেয়া হলো তা জানতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে পুলিশ মিন্টু নামে একজনকে সন্দেহ করছে, তার পিতাকে আটক করে ছেলে হাজিরের শর্তে ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বাগুটিয়া গ্রামের মধ্যপাড়ার ওসমান ডাক্তারের বাড়ির পুকুরে সদ্য ভূমিষ্ট এক নবজাতকের লাশ ভাসতে দেখা যায়। পরে নবজাতকটি পুঁতে ফেলা হয়!
অভিযোগে জানা গেছে, একই গ্রামের ঠান্ডু’র ছেলে মিন্টু এবং তালেব মোল¬ার মেয়ে পারভিন আক্তারের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেম চলে আসছিল। এক পর্যায়ে দৈহিক সম্পর্কের ফলে ভূমিষ্ট হয় এক পুত্র সন্তান। নবজাতকটি স্বাভাবিক ও সুস্থভাবে ভূমিষ্ট হলেও রাঁতের আঁধারে তাকে পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার শিশুটি মাটিতে পুঁতে ফেলে কিছুলোক। শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে প্রেমিক মিন্টু নিজের অপকর্ম আড়াল করতে প্রভাবশালীদের দিয়ে সালিশ বৈঠক করায় এবং মোটা অংকের টাকা দিয়ে গ্যাংগ্র“প ও তালিকাভূক্ত খলিল বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে ঘটনা ধাপাচাপা দিতে একরাম নামে এক ছেলের সাথে মেয়েটির বিয়ে দিতে সক্ষম হয়।
অভিযোগ উঠেছে গ্রাম্য সালিশের শিকার হয় মসলেম উদ্দিনের ছেলে দিনমজুর একরাম আলী। সাজানো ঘটনার প্রতিবাদ ও বিয়ে করতে না চাওয়ায় একরামকে বাহিনীর লোকেরা পিটুনি দিয়ে মাতব্বরদের সহযোগিতায় জোরপূর্বক পারভীন আক্তারের সাথে বিয়ে দেয়।
ঘটনার হোতা মিন্টু পুরো বিষয়টির মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করায় এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠলেও সন্ত্রাসী খলিল গ্রুপের দাপটে উদ্বেগ আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সবাই। এ ঘটনায় পারভিন ও তার পরিবারের কোন সদস্য মুখ খুলতে রাজি না হলেও তারা হুমকি ও চাপের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে একরাম বলছে, ভূমিষ্ট সন্তান তার নয় বা সে কিছুই জানে না। যদি তার হতো তবে কেন হত্যা করা হলো, কে করল? সংশি¬ষ্ট ঘটনার সাথে গ্যাং ও সন্ত্রাসী খলিল গ্র“প জড়িত থাকায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এদিকে পুলিশ বিলম্বে হলেও ঘটনার বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমেছে। নবজাতকটি কেন হত্যা করা হলো, মিন্টু ও তার পরিবারের পালিয়ে থাকার রহস্য এবং একরামের সাথে বিয়ের বিষয়টির খোঁজ-খবর করছে পুলিশ।
শৈলকুপা থানার ওসি এমএ হাসেম খান জানান, বাগুটিয়া গ্রামের নবজাতক হত্যাকে কেন্দ্র করে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে, যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/জেআরটি/২০১৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur