দুই শতাধিক কুমড়া গাছ বিনষ্ট

মতলব পৌরসভার উত্তর নলুয়া গ্রামে রাতের আধারে প্রায় ২ শতাধিক কুমড়ার গাছ বিনষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে প্রায় ৩৬ শতাংশ জমিতে চাষ করা কুমড়ার গাছ বিনষ্ট হওয়ায় হতাশায় পড়েছেন কৃষক মোজাম্মেল প্রধান। এই নিয়ে তার ছেলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার দাবি, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে একই বাড়ির মৃত জমির হোসেন প্রধানের ছেলে বিপুল প্রধান এই কাজ করেছে।

খবর পেয়ে মতলব দক্ষিণ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) কৃষক মোজাম্মেল প্রধানের ক্ষতিগ্রস্ত কুমড়ার ক্ষেতটি পরিদর্শন করেন। এদিকে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।

কৃষক মোজাম্মেল প্রধান বলেন, ধার দেনা করে ২৫ হাজার টাকার বিনিময় এক বছরের চুক্তিতে একই এলাকার মৃত জুনাব আলী প্রধানের ছেলে সোলায়মান প্রধানের কাছ থেকে ৩৬ শতাংশ জমি লিজ নেন। ওই জমিতে কুমড়ার আবাদ করা হয়। ইতিমধ্যে সকল গাছে ফুল এসেছে এবং কিছু কিছু গাছে ছোট ছোট কুমড়াও ধরেছে। আগামী জানুয়ারিতে এই ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারতেন।। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে শিকড়সহ কুমড়া গাছগুলো উঠিয়ে বিনষ্ট করে ফেলে যায়।

মোজাম্মেলের ছেলে রাকিব প্রধান বলেন, একই বাড়ীর মৃত জমির হোসেন প্রধানের ছেলে বিপুল প্রধানদের সাথে জমি জমা নিয়ে আমাদের বিরোধ চলছিল। গত বুধবার উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে আমাকে মারধর করার চেষ্টা করে। শুক্রবার রাতে আমাদের জমির আশে পাশে তাকে ( বিপুল) ঘুরতে দেখা যায়। আমাদের ধারনা সেই আমার চাষকৃত মিষ্টি কোমড়া গাছগুলো উঠিয়ে ফেলে বিনষ্ট করে।
কৃষক মোজাম্মেল আরো বলেন, বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে জমিটি জমিটি বর্গা নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে মিষ্টি কোমড়ার চাষাবাদ করি।আমার যে ক্ষতি হয়েছে তা কিভাবে পোষাবো এবং এনজিও থেকে ঋণ পরিশোধ করবো তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ সরকার বলেন, ফসলের সাথে শত্রুতা এটা খুবই দুঃখজনক। যারা এ জগন্য কাজটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং কঠিন শাস্তি দেয়া উচিত। ঘটনার বিষয়ে বিপুল প্রধানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।

এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার চৈতন্য পাল বলেন,বিষয়টি খুবই নেক্কারজন।পারিবারিক এবং জমি জমা নিয়ে বিরোধের কারনে ফসল বিনষ্ট করা অপরাধ। কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন, ২০১৮-এর অধীনে শাস্তিযোগ্য, যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে ফসল নষ্ট করলে জেল ও জরিমানা হতে পারে।

মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাফিজুর রহমান মানিক বলেন,‘এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

প্রতিবেদক: মাহফুজ মল্লিক/
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫