স্বাস্থ্য

কী খাবেন এই গরমে

এই গরমে কী খাবেন ।

প্রচণ্ড গরম। বাইরে বেশ রোদ। একটু পরপর গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। কিছুই খেতে মন চায় না এ সময়। এমন আবহাওয়ায় দিনভর বারবার এমন খাবার বেছে নিন যাতে জলীয় অংশ বেশি। এ ধরনের খাবার আপনার পিপাসা মেটাবে, মেটাবে পানির চাহিদা। সুস্থ থাকতেও সাহায্য করবে। আসুন, জেনে নিই এ রকম কিছু খাবারের কথা:

তরমুজ: তরমুজের প্রায় ৯০ শতাংশ পানি। এ ছাড়া তরমুজে সহজ শর্করা বা গ্লুকোজও আছে। তাই এই ফল সরাসরি শক্তি জোগায়।

দই-চিড়া: গরমে নাশতা হিসেবে ঠান্ডা টক দই ও ভেজানো চিড়া খেয়ে স্বস্তি পাবেন। এতে আপনি শর্করা ও প্রোটিন—দুটোই পেয়ে যাবেন। দই-চিড়ার সঙ্গে মেশাতে পারেন কলা বা অন্যান্য ফলও। তাহলে পরিপূর্ণ একটি খাবার হবে। এটি সহজে হজম হয় এবং শরীর ঠান্ডা রাখে।

সালাদ: দুপুরে বা বিকেলে শসা, টমেটো, ক্যাপসিকামসহ বেশ খানিকটা সালাদ খেয়ে নিন। ক্যাপসিকামের ৯২ শতাংশই পানি। তা ছাড়া এতে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ আছে। শসায় পানির পরিমাণ অনেক। টমেটোতে পানি ছাড়াও ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাবেন, যা আপনার ক্লান্তি দূর করবে। লেটুস পাতা যোগ করলে আরও ভালো। লেটুসে ৯৬ শতাংশ পানি থাকে।

ফলের রস: দাবদাহের সময় প্রচুর পানি পান করেও যেন পিপাসা মিটতে চায় না। তাই এ সময় বাইরে থেকে ঘরে ফিরে লেবু মেশানো পানি, পুদিনা পাতা দিয়ে লেবুর শরবত, মাল্টার রস বা কমলার রস বা ডাবের পানি এনে দেবে শীতলতা ও আরাম। চা-কফি একটু কমই খান এ সময়। ঘেমে-নেয়ে শরীর পানির পাশাপাশি লবণও হারায়। তাই লেবু-পানিতে একটুখানি লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন।

এছাড়া গরমে পানিশূন্যতা দূর করতে যা খাবেন

গরমে প্রাণ অতিষ্ঠ। দিনের বেলায় বাইরে বের হলেই ঘামে ভিজে যাচ্ছে শরীর। কেবল দিনে নয়, সন্ধ্যায় বা রাতে ঘরে বসেও ঘামতে হচ্ছে গরমে। গরমে দেহ ঠান্ডা রাখতে স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় ঘামের সৃষ্টি হয়। তবে এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতাও দেখা দেয়। পানিশূন্যতা দূর করতে বেশি বেশি পানি পান করার কোনো বিকল্প নেই। তবে কেবল পানি পান করেই গরমের দিনে শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন প্রচুর পানি আছে এবং সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া।

কী খাবেন এই গরমে

১. বিশুদ্ধ পানি: প্রচলিত আছে দৈনিক আট গ্লাস পানি পান করলে শরীর সুস্থ থাকে। তবে নিয়ম করে অনেকের পক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে তৃষ্ণা মেটাতে যতটা পারেন পানি পান করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন বিশুদ্ধ, জীবাণুমুক্ত ও পানযোগ্য হয়।

২. শসা বা ক্ষীরা: শসায় রয়েছে ৯৬ দশমিক ৭ শতাংশ পানি। এই গরমে শসার সালাদ রাখুন প্রতিবেলায়। শসার সঙ্গে ধনেপাতা মেশালে স্বাদ বাড়বে। পাশাপাশি ননিবিহীন দুধের তৈরি দই, পুদিনাপাতা আর বরফ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করতে পারেন। এই জুস আপনার শরীর সতেজ রাখবে ও তৃষ্ণাও মেটাবে।

৩. লেটুস: লেটুসে আছে ৯৫ দশমিক ৬ ভাগ পানি। যেকোনো একবেলার খাবারে লেটুস রাখার চেষ্টা করুন। লেটুস দিয়ে চমৎকার চিকেন সালাদ তৈরি করা যায়। বাচ্চাদের টিফিনেও স্যান্ডউইচের সঙ্গে লেটুস দিতে পারেন।

৪. মুলা: মুলায় রয়েছে ৯৫ দশমিক ৩ ভাগ পানি। সালাদের স্বাদ বাড়াতে কচি লাল মুলার তুলনা নেই। পানির পাশাপাশি এতে ক্যাটেচিন উপাদান রয়েছে, যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ধনেপাতা, বাঁধাকপি, সেদ্ধ ছোলা দিয়ে মুলার সালাদ করুন। লেবু চিপে তাতে খানিকটা অলিভ অয়েল দিন। এই সালাদ আপনার ভালো লাগবেই।

৫. টমেটো: টমেটোতে রয়েছ ৯৪ দশমিক ৫ ভাগ পানি। এ ছাড়া এতে প্রচুর ভিটামিন-সি, লাইকোপেন, ক্যারোটিন, রিবোফ্লোবিন, ক্যালসিয়াম ও লোহা থাকে। টমেটোর জুস কিংবা সালাদ দুই সুস্বাদু। এ ছাড়া রান্নার পরও টমেটোর পুষ্টিগুণ কমে না। তাই গরমের সময় টমেটোর স্যুপ কিংবা ঝোল খেতে পারেন।

৬. তরমুজ: তরমুজে রয়েছ ৯১ দশমিক ৫ ভাগ পানি। এতে রয়েছে ক্যানসার–প্রতিরোধী উপাদান লাইকোপেন। প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ লবণে সমৃদ্ধ এই ফল গরমে স্বস্তি দেয়।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময়০১:০০ পি.এম, ১৬ এপ্রিল ২০১৭,রবিবার
ইব্রাহীম জুয়েল

Share