চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ০৬ নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামের হাজী বারির সোহেল রানার বড় ছেলে। মাত্র ১১ বছর বয়সী শিশু মেহরাজ ককশীট দিয়ে তৈরী করলো ঢাকা বরিশাল রুটে চলাচল কারী কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চ।
৬ষ্ঠ শ্রেনীর এই মেধাবী শিশু মেহরাজ নিজের হাতে লঞ্চ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন এলাকাবাসীকে। প্রতিদিনই এ লঞ্চটি দেখতে এলাকার মানুষ ভীড় করতে দেখা যায়। তৈরী করা লঞ্চটির নাম দিয়েছে সে কীর্তনখোলা-১০।
বাবার সাথে একবার নদীপথে কীর্তনখোলা লঞ্চে বরিশাল যাতায়াত করে সাইদুল ইসলাম মেরাজ। এরপর থেকেই সে লঞ্চ নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করে।
একপর্যায়ে বাবার অনুপ্রেরণায় ও সহযোগিতায় ককশিট, মোটর, লাইটিং ও ব্যাটারি দিয়ে নিজের হাতে কারুকাজ করে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থকে বরিশাল রুটে চলাচলকারী কীর্তনখোলা-১০ এর মতো একটি লঞ্চ তৈরি করে শিশুটি।
এ শিশুর পুরো নাম- সাইদুল ইসলাম মেহরাজ, গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ০৬ নং গুপ্টি ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামের হাজী বাড়ির সোহেল রানার বড় ছেলে সে। বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে, তার প্রখর মেধা ও পারদর্শীতা নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর।
লঞ্চ তৈরিতে উপাদান হিসেবে তার কাজে লেগেছে ককশিট, ব্যাটারি চালিত মোটর, ম্যাজিক লাইট, ও গাম, লঞ্চের দৈর্ঘ-৫ ফিট উচ্চতা-১০ ইঞ্চি, প্রস্থ -৯ ইঞ্চি, এটি দেখতে কীর্তনখোলা-১০ এর অনুরুপ ।
ব্যাটারি চালিত এ লঞ্চটি তার বাড়ির পুকুরে চলমান। এতে ব্যবহার করা বিভিন্ন আলোকসজ্জা মিট মিট করছে। নিখুঁত হাতে তৈরি করা লঞ্চটির ভেতরে রয়েছে মাস্টার ও যাত্রীদের কেবিন
এদিকে লঞ্চটি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই মেহরাজের বাড়িতে লোকজন আসতে দেখা যায়।
উপজেলার ৭ নং ইউপির বড়ালীয়া গ্রাম থেকে এসেছেন কে.এম হাসান। তিনি জানান চাকরির সুবাদে বরিশালের লঞ্চের যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করেন। তার পাশের এলাকাতে একটি শিশু বরিশালের লঞ্চ বানিয়েছে জানতে পেরে দেখতে এসেছেন। মেহরাজের তৈরি লঞ্চটি দেখে তার মনে হয়েছে কীর্তনখোলা ১০ মডেলের লঞ্চটি যেন কেহু এনে এখানে ভাসিয়ে দিয়েছে। সত্যি অসাধারণ মেধার অধিকারী শিশু মেহরাজ।
আরও পড়ুন- ভাইরাল সেই নববধূকে মোটরসাইকেল উপহার দেবেন শ্বশুর
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার ওয়ার্ডে একটি শিশু লঞ্চ তৈরি করেছে শুনে মানুষ দেখে এসে প্রসংশা করে করে শিশুটির। তাই আমিও দেখতে এসেছি সত্যি শিশুর প্রতিভা দেখে আমিসহ এলাকার অনেকেই মুগ্ধ।
সাইদুল ইসলাম মেহরাজ জানায়, যে কোনো কিছু দেখে খুব সহজেই আয়ত্ত করে নিতে পারে সে। তার ভালো লাগে নতুন কিছু করতে, লঞ্চ তৈরি করা তার সবচেয়ে ভাল সখের মধ্যে একটি। এর আগেও সে একই কায়দায় একটি উড়ো জাহাজ তৈরি করে তা উড়িয়েছে বলে জানিয়েছে।
শিশুটির ভবিষ্যৎ ইচ্ছে সম্পর্কে জানতে চাইলে সে জানায়, আমি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
শিশুটির বাবার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার পরিবারে তিন সন্তানের মধ্যে মেহরাজ আমার বড় ছেলে। সে আমার সাথে নদীপথে গিয়ে ছিলো। লঞ্চ দেখে আমার কাছে জানতে চায় লঞ্চ কে বানায় বিভিন্ন কৌতুহলী প্রশ্ন আমাকে করে সে। আমি সাধ্যমত উত্তর দিয়েছি। এর কয়েকদিন পর থেকেই দেখি ককশিট দিয়ে উড়ো জাহাজ, লঞ্চ তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায় তাকে। আমিও এইসব দেখে তার আগ্রহে সাড়া দেই।
মেহরাজ যেন ভবিষ্যতে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য ভলো কিছু করতে পারে আমি সকলের দোয়া কামনা করছি।
প্রতিবেদক : শিমুল হাছান, ১০ নভেম্বর ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur