সিলেট করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর টাইমস :
সিলেটে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার শিশু সামিউল আলম রাজনের মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কারণে; তার শরীরে ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার পরিদর্শক আলমগীর হোসেন জানান, ময়না তদন্তের এই প্রতিবেদন সোমবার দুপুরে তাদের হাতে পৌঁছেছে।
এদিকে রাজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ইসমাইল হোসেন আবলুছ নামে আরেকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গত বুধবার সকালে চোর সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের রাজনকে। নির্যাতনকারীরাই শিশুটিকে পেটানোর ভিডিও ধারণ করে এবং ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। ২৮ মিনিটের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
রাজনের লাশের ময়নাতদন্ত করেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাসমিনা ইসলাম।
“প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণই রাজনের মৃত্যুর কারণ। তার শরীরে ৬৪টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে,” বলেন পরিদর্শক আলমগীর।
সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাস চালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে রাজন স্থানীয় অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়। পরিবারকে সাহায্য করতে সে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করত।
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে ছড়িয়ে পড়া ২৮ মিনিটের ওই ভিডিওতে কুমারগাঁও বাসস্টেশনের একটি দোকানঘরের বারান্দার খুঁটিতে বেঁধে রাজনকে পেটানো দেখা যায়। এক পর্যায়ে পানি খেতে চাইলে ‘ঘাম খা’ বলে মাটিতে ফেলে রাখা হয় তাকে।
মারধরের সময় রাজনের আর্তচিৎকার এবং নির্যাতনকারীদের অট্টহাসি ও নানা কটূক্তি শোনা যায়। রাজনের নখ, মাথা ও পেটে রোল দিয়ে আঘাত করার পাশাপাশি বাঁ হাত ও ডান পা ধরে মোচড়াতেও দেখা যায়।
ওইদিনই একটি মাইক্রোবাসে করে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলম (২২) নামের একজনকে ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
ঘটনায় দিনই পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে, যাতে মুহিত ছাড়াও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও স্থানীয় চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।
পরিদর্শক আলমগীর জানান, রাজন হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে সোমবার সকালে মিরেরগাঁও এলাকা থেকে ইসমাইল হোসেন আবলুছ (৩২) নামে আরেকজনকে আটক করা হয়েছে।
ইসমাইল জালালাবাদ থানার মিরেরগাঁও এলাকার ইব্রাহিম আলীর ছেলে।
আলমগীর হোসেন বলেন, “ইসমাইলের নাম মামলার এজাহারে নেই। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।”
আপডেট : বাংলাদেশ সময় : ০৩:৩০ অপরাহ্ন, ২৮ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, সোমবার ১৩ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি