চাঁদপুর শহরে বেড়ে চলছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য একের পর ঘটে চলেছে মারামারি, হামলা ও রক্তাক্ত জখম এর ঘটনা সহ বহু অপ্রীতিকর ঘটনা। আর এসব ঘটনাগুলো ঘটছে সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, কিংবা পূর্ব শত্রুতার দ্বন্দ্ব নিয়ে একের পর এক এসব কিশোরদের মারামারি ও হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে।
ইতোমধ্যে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় একদল কিশোর গ্যাংয়ের অতর্কিত হামলায় মোবারক গাজী (২০) নামের এক যুবক গলায় কোপ খেয়ে রক্তাক্ত জখম হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলাসহ চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের মারামারি ও হামলায় আহত হওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন… হাইমচরে বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে যুবককে হত্যা, আহত ৪
এরমধ্যে গত ১ মার্চ সোমবার বিকেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর শহরের আল-আমিন স্কুলের পেছনে দুটি পক্ষের হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে আব্দুর রহমান (১৮), মাসুদ (২০), হোসেন (১৯), আলিফ (১৮) ও রিফাত (১৮) কে বেদম মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠে। হামলাকারী কিশোর গ্যাং সদস্যরা শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
গত ১৮ মার্চ বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর শহরের মিশন রোড এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় ইমরান (২০) নামের একজনকে জখম করা হয়েছে। ওইদিন খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এ সময় কিশোর গ্যাং সন্দেহে ২২ কিশোরকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া গত ১৯ মার্চ বিকেল সাড়ে ৪টায় চাঁদপুর শহরের সিংহপাড়া এলকার আফজাল খানের ভবনের পাঁচ তলায় ভাড়াটিয়া নজরুল ইসলামের ফ্লাট বাসায় ঢুকে তার ছেলে নাবিল ইসলামকে একদল কিশোর গ্যাং কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন…চাঁদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত যুবক বাঁচতে পানিতে ঝাঁপ, আটক ২২
জানা যায়, আহত নাবিল চাঁদপুর আলা আমিন একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র। ওই দিন রাতেই নাবিলের পিতা নজরুল ইসলাম চাঁদপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এর বাহিরে গত ১৯ মার্চ শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় বিয়ের দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে একদল কিশোর গ্যাংয়ের অতর্কিত হামলায় মোবারক হোসেন (২০) নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাজু আহমেদ (২৫), মহিন (১৮), হামিদ (২০) ও মহিন (২১) গুরুতর আহত হয়। যা চাঁদপুরের একটি আলোচিত হত্যাকান্ড বলে সকলে অবগত রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার কয়েকটি ঘটনা ঘটায় গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোর গ্যাং অপরাধ প্রতিরোধ ও মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে মডেল থানা পুলিশ কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ৪৭ জন সদস্যকে আটক করেনন।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে চাঁদপুর প্রেসক্লাব ঘাট থেকে অভিযান শুরু হয়ে পাঁচ নম্বর কয়লা ঘাট, স্ট্যান্ড রোড, বেদে পল্লী, ছায়াবানী রোড, নতুন আলিম পাড়া, প্রতাপ সাহা রোড, মিশনরোড বালুর মাঠ ও ট্রাকরোডে এই অভিযান পরিচালিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে সন্ধ্যার পর পাড়া-মহল্লার রাস্তায় কোনো শিক্ষার্থী পেলেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। কারণ চাঁদপুরবাসীকে কিশোর গ্যাং মুক্ত একটি শহর উপহার দিতে চাই।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,২৪ মার্চ ২০২১