চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল লঞ্চঘাট থেকে উদ্ধার হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরী সংবাদকর্মীদের সহায়তায় ৮ দিন পর ফিরে পেল স্বজনদের।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসানের তৎপরতায় এই মহানুভবতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভূক্তভোগীরা। ঈদের পরদিন মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল লঞ্চঘাট থেকে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদ মানসিক ভারসাম্যহীন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পরপরই উপজেলা প্রশশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে বার্তা প্রেরণ করেন।
শুক্রবার দুপুরে ওই কিশোরীর স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয় কিশোরীকে। মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান স্বজনদেও কাছে তুলে দেন।
এ মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীর নাম নূর নাহার (২২)। সে নারায়ণগঞ্জ উপজেলার চাষাঢ়া এলাকার শাহজাহানের মেয়ে।
ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান একেএম শরীফ উল্লাহ সরকার জানান, ষাটনল লঞ্চঘাট এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই মেয়েটিকে দেখতে পায় স্থানীয় এক কর্মী। এ সময় তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলেও পরিচয় জানা যায়নি। তখন বুঝতে পারেন মেয়েটির স্মৃতিভ্রম হয়েছে কিম্বা মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।
একেএম শরীফ উল্লাহ সরকার জানান, খবর পেয়ে ওইদিনই ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামপুলিশের সহায়তায় নিয়ে যান। তিনি মেয়েটিকে উদ্ধার করে ইউএনও’র সঙ্গে কথা বলে গ্রামপুলিশের নিরাপত্তা হেফাজতে নেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে মেসেজ দেয়ার পাশাপাশি মেয়েটির সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। বুধবার মেয়েটি তার নাম নূর নাহার বলে জানান। তিনি আরো বলেন নারায়ণগঞ্জ নিয়ে গেলে সে বাসায় যেতে পারবেন। এরপর থেকেই নারায়ণগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মী জুয়েলে সহায়তায় ওই কিশোরীর স্বজনের সন্ধান পাওয়া যায়।
এরপর মেয়েটির স্বজনরা ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে শুক্রবার (৩০ জুলাই) তাকে স্বজনদের কাছে তুলে দেন ইউএনও গাজী শরিফুল হাসান। এ সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল, সেনা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান, ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান একেএম শরীফ উল্লাহ সরকার’মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম,সহ ইউপি সদস্য ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়েটির বাবা শাহজাহান জানান, ঈদের দুদিন আগে মানসিক ভারসাম্যহীন নূর নাহার বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরেনি। মতলব উত্তর উপজেলা প্রশাসন ও ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তাকে উদ্ধার না করলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান জানান, তিনি মানবিক কারণেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যান। লঞ্চঘাটে সে খারাপ লোকের খপ্পড়ে পড়লে তার বড় ক্ষতি পারতো।
তিনি জানান, মেয়েটির স্বজনদের কাছে তাকে তুলে দিতে পেরে তিনি ও তার মানসিকভাবে তৃপ্ত। ইউএনও’র এমন কাজকে মতলব উত্তরের সুধী সমাজ সাধুবাদ জানিয়েছেন। একটি অসহায় মেয়েকে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে স্বজনদের কাছে তুলে দিয়ে একটি মহৎ কাজ করেছে এমন দাবি ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় সচেতন মহলের।
নিজস্ব প্রতিবেদক