টাকার অভাবে কিডনি যন্ত্রণায় বিছানায় কাতরাচ্ছে মতলবের বাবলু

মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই জীবনের আলোর প্রদীপ নিবে যাবে ভাবতেও পারেনি বাবলু নামের এক যুবক। হঠাৎ করে শরীরের কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার খবরে সে মৃত্যুযাত্রী হয়ে দিনক্ষণ গুনতে শুরু করে দিয়েছে সে। মতলব দক্ষিণ উপজেলার ঢাকিরগাঁও গ্রামের নুর মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে বাবলু।২ বোন ১ ভাইয়ের মধ্যে সেই বড়। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর আগে মতলবের আমিরাবাদ এলাকায় নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাদের বসতভিটা।

আশ্রয় নেয় ঢাকির গাঁও গ্রামের মরহুম আব্দুল আলীর বাড়ীতে। বাবা একজন বৃদ্ধ দিনমজুর। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য সহায়তা নিয়ে বিয়ে দেয়া হয় দুবোনকে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে নারায়নগঞ্জে গিয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ করা শুরু করে বাবলু। সেখানে হঠাৎ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চরম ব্যথা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পারে তার একটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে এবং আরেকটি হওয়া পথে।

দ্রুত সময়ের মধ্যে উন্নত চিকিৎসা না করলে দুটি কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারে। এ মুহুর্তে তার এ কিডনি চিকিৎসা করাতে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। মানুষের চিকিৎসার টাকা যোগাতে না পেরে এখন ডাক্তারদের চিকিৎসাপত্র বিছানয় রেখে মৃত্যুর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন বাবলু।

এমুহূর্তে বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা পেলে এবং তার পাশে দাঁড়ালে হয়তো বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখতো। কোনো মানুষের পক্ষে পৃথিবীতে একা বাস করা সম্ভব না। বিভিন্ন প্রয়োজনে একে-অপরের সাহায্য লাগে। মানুষের জন্য কিছু করার মধ্যে আনন্দ ও তৃপ্তি আছে। যা সবকিছুর চেয়ে আলাদা।

মানুষ সারা জীবন তাকেই মনে রাখে যিনি মানুষের জন্য কিছু করেন। একটি সুন্দর স্বপ্ন হতে পারে, মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা ও সহযোগিতার সৌন্দর্য উপলব্ধি করা। দাঁড়াতে পারি বিপদে মানুষের পাশে এবং পারি মানবতার পাশে এসে সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে। শিল্পী, সুরকার ও গীতিকার ভূপেন হাজারিকার বিখ্যাত গানের মতোই-মানুষ মানুষের জন্য/জীবন জীবনের জন্য/একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না/ও বন্ধু। মানুষের পাশে দলমত, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার এগিয়ে আসা জরুরি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন অত্যাচার, অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর। তিনি ‘সর্বহারা’ কাব্যগ্রন্থের ‘কান্ডারী হুশিয়ার’ কবিতায় লিখেছেন, ‘হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন? কাণ্ডারি! বল, ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার।’

সাধ্যমতো মানবসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা ধর্ম ও মানবিকতার দৃষ্টিতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। সাহায্য করা অনেক ভাবেই হতে পারে। কথা দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে, শ্রম দিয়ে, সঙ্গে থেকেও সাহায্য করা যায়। সংকটে ও বিপদে মানুষ মানুষকে সাহায্য করতে হবে। না হলে মানব জন্ম অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। মানব জীবনের সম্পূর্ণতা আর তৃপ্তির প্রয়োজনে মানুষের জন্য কিছু করা দরকার। আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে আক্ষেপ করতে হয়, ‘হে মানুষ তুমি আবার মানুষ হও’।

আসুন, মানুষের উপকারে নিজেকে আত্মনিবেদন করি। একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে যদি একটি প্রাণ বাঁচে; একজন মানুষ বাঁচার স্বপ্ন দেখে, তাতে হয়তো আমাদের জীবনের স্বার্থকতা খুঁজে পাওয়া হবে মহাআনন্দের এবং সুখের। তাই এ অসহায় মানুষটির পাশে এগিয়ে আসুন।তার নিকট সাহায্য পাঠানোর জন্য ০১৯২৯৩৬৯৫৩৫ ( নগদ) নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য সে অনুরোধ জানিয়েছেন।

প্রতিবেদক: মাহফুজ মল্লিক, ৯ এপ্রিল ২০২৩

Share