Wednesday, May 13, 2015 12:10:37 PM
চাঁদপুর টাইমস ডট কম:
ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ গ্রেফতার হওয়ার পর তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি কিভাবে এদেশে এসেছেন।
জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি কী করে এখানে এলাম কিছুই জানি না। কিছু লোক চোখ বাঁধা অবস্থায় গাড়িতে করে আমাকে এখানে ফেলে গেল। তারা কারা তা-ও জানি না।’
সালাহ উদ্দিন মেঘালয় পুলিশকে বলেন, ‘আমাকে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে অপহরণ করা হয়। তারা আমাকে বন্দী করে রেখেছিল। যারা আমাকে বন্দী করেছিল, তারা সবসময় চোখ বেঁধে রেখেছে। আমি কিছুই দেখতে পাইনি। তারা একটি গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে আসে। এরপর ফেলে যায়। আমি কোথায় তার কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার কাছে সব অচেনা মনে হচ্ছে।’
গত ১০ মার্চ অচেনা এক দল লোক উত্তরার একটি বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর থেকে আর কিছুই মনে করতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন তিনি।
নিখোঁজ হওয়া হওয়ার দুই মাস পর ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে সন্ধান মেলার পর বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন।
বুধাবার মেঘালয় থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক দ্য মেঘালয় টাইমস ও দ্য মেঘালয় গার্ডিয়ান এ খবর দিয়েছে।
পত্রিকা দুটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সিলেট সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বের শিলংয়ে কিভাবে এলেন, তাও বলতে পারেননি ৫৪ বছর বয়সী বাংলাদেশে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য।
সন্দেহজনক আচরণের জন্য সোমবার সকালে শিলং পুলিশ আটকের পর সালাহ উদ্দিন নিজেকে বাংলাদেশের সাবেক প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন। তখন মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠায়।
মানসিকভাবে সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকরা জানালে সালাহ উদ্দিনকে সরকারি অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করে পুলিশ। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের জন্য তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশ। সুস্থ্ হলেই সেখানকার আদালতে তাকে হাজির করা হবে বলে মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছেন।
মেঘালয় পুলিশ জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদ সোমবার সকালে গলফ লিংক এলাকায় উদভ্রান্তের মতো ঘোরাফেরা করছিলেন। সকাল থেকে একই স্থানে তিনি বারবার পায়চারি করছিলেন। এ রকম একজন লোককে ঘোরাফেরা করতে দেখে লোকজন পুলিশকে জানায়। এরপর পুলিশ এসে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশের কাছে তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না।
একপর্যায়ে তিনি নিজেকে বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রী বলে পরিচয় দেন। তখন পুলিশের সন্দেহ হয়, তিনি ঠিক বলছেন কি না। কিন্তু তিনি এর সমর্থনে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারছিলেন না। পরনের কাপড় ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই ছিল না। তিনি কাঁপছিলেন।
শিলংয়ের পূর্ব খাসি হিলস জেলার পুলিশ প্রধান মারিয়াহোম খারক্রাং জানান, তিনি ঠিকমতো কথাবার্তা বলতে পারছিলেন না। মনে হচ্ছে, তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এ কারণে তাঁকে মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তবে তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর হার্টে ও লিভারে সমস্যা আছে। হাসপাতালে আসার পর তিনি একজন চিকিৎসকে বলেন, ‘আপনার ফোনটা একটু দিন, আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাই।’