ঈদকে সামনে রেখে শাহরাস্তি উপজেলায় চোরা কারবারীরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। অবৈধভাবে আসা ভারতীয় মালামালের ব্যবসার সাথে জড়িত শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি সিন্ডিকেট, বিশেষ করে ট্রেন ও বাস যোগে কুমিল্লার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আসা এসব মালামাল অত্র উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।
অবৈধ ব্যবসার সাথে পশ্চিম উপলতা সূয়াপাড়া , কালিয়াপাড়া ও মেহের স্টেশন এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
বছরের পর বছর ধরে তারা এ ব্যবসার সাথে জড়িত একথা সবার সামনে স্বীকারও করেন। বাধা দিতে কেউ এগিয়ে আসলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।
১৫ জুন পৌনে ২ টায় কুমিল্লা থেকে আসা ডেমু ট্রেনের ওপর কিছুটা নজর রেখে দেখা যায়, ট্রেনটি মেহের স্টেশনে এসে পৌঁছলে পেছনের বগি থেকে একে একে ৬ টি বস্তা নামানো হয়। অবৈধ পণ্য ট্রেন থেকে নামিয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন জিআরপির এক সদস্য এসময় সাংবাদিক দেখে তিনি মুখ লুকিয়ে ভিতরে ঢুকে যান। প্লাটফর্মে অপেক্ষমান ৫/৬ যুবক বস্তা গুলো ধরে গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সি এনজিতে উঠিয়ে দিচ্ছেন ।
এ সময় তাদের সাথে একজন মহিলা সদস্যও ছিলো। এ মহিলা কুমিল্লার শশীদল থেকে মাল গুলো নিয়ে আসছেন। সাংবাদিকরা ছবি তোলার এক প্রর্যায়ে মৃত দাইমুদ্দিনের পুত্র চোরা কারবারী সুজরুত আলী ওরফে সুরা এগিয়ে এসে ছবি তুলতে বাধা দেন এবং বলেন ছবি তুলে কি হবে কোন সমস্যা নাই।
আসেন আপনাদের সাথে কথা বলি। একপর্যায়ে সুরা সাংবাদিকদের অর্থ দিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন, সাংবাদিকগণ তার প্রস্তাবে সম্মত না হওয়ায় তিনি বলেন, আমি কয়েক যুগধরে ব্যবসা করে আসছি সাংবাদিক পুলিশ সবাই সুবিধা পায় আপনারা কিছু টাকা নিয়ে যান, প্রতিমাসে আইসেন আরো টাকা দিবো।
তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় এসে উপস্থিত হন সুরার ছেলে মেহের রেলগেট এলাকার ফল ব্যবসায়ী শাহজাহান সাজু ।
সে জানায়, ‘আপনারা ভেজাল বাড়িয়ে লাভ নেই। ব্যবসা কেউ বন্ধ করতে পারবেনা, আমার বাবা বহু বছর ধরে ব্যবসা করে আসছে আমরা এটা করেই খাই। অনেক প্রভাবশালী নেতা, কতিপয় সাংবাদিক , পুলিশ, টাকা নেয় আপনারা আর কি করবেন?’
চোরা কারবারীদের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কয়েক স্তরের নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা । ঈদ মৌসুম সামনে রেখে প্রতিদিনই আসে পণ্য।
অনেকেই জানান, তার এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক দিক ম্যানেজ করেন বাবুল ওরফে পাঠা বাবুল । ভারতীয় পণ্য মেহের স্টেশনে নামার পর এগুলো উপজেলা বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয়, অনেকেই জানান বর্তমানে জিরা, গোলমরিচ, এলাচি, শাড়ি, থ্রিপিচ বেশি আসছে, এ ছাড়া এ পথে মাদকদ্রব্য ও কুমিল্লার সিমান্ত হয়ে চলে আসছে।
জনসম্মুখে বুক ফুলিয়ে চোরাকারবারীদের এ ব্যবসা বহু দিনের । মাঝে মাঝে প্রশাসনের অভিযান থাকলেও মূলহোতারা নিরাপদেই থেকে যায়। যাত্রীরা এ দৃশ্য দেখে অবাক হওয়া ছাড়া আর কোন কিছুরই উপায় থাকে না, স্থানীয় অনেক নেতাদের ভাগ ভাটোয়ারা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৪:০০ পিএম, ১৮ জুন ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ