দীর্ঘ ২৪ বছর পর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন মতলবের হেলাল

দীর্ঘ ২৪ বছর পর কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করলেন ঢাকা মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমামুল হাসান হেলাল।

‘৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে আনীত যেসব গায়বী মামলা ছিল, সেই সব মামলায় জামিন তিনি জামিন লাভ করে জামিনে মুক্তি পান। ২৪ বছর পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি লাভ করা ইমামুল হাসান হেলাল মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের দশানী গ্রামের কৃতি সন্তান।

জানাযায়, সাবেক এই তুখর ছাত্রনেতা ইমামুল হাসান হেলালকে ২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তাকে গ্রেফতার করেছিল। সেই থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।
তার বড় ভাই মোঃ ওয়াহিদুল হাসান দিপু বলেন, ‘সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে আমরা আমার ভাইকে বুকে পেয়েছি। আল্লাহর কাছে লাখ শুকরিয়া আদায় করছি।’

তিনি জানান, আমার ছোট ভাই ইমামুল হাসান হেলাল ছিলো বাংলাদেশ ছাত্রদলের মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিএনপি ঘোষিত সকল কর্মসূচি হেলালের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর এলাকায় সম্পন্ন হতো। তোফায়েল আহমেদ জোসেফসহ আওয়ামী লীগের অনেকেই তা সহ্য করতে পারেনি। কোনোভাবে আটকাতে না পেলে ২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নির্দেশে হেলালকে মিথ্যা-ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেফতার করা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গ্রেফতার হওয়া হেলাল যখন কারাগারে ওই অবস্থায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে পুলিশ। ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বরের সেই তালিকায় হেলালের নামও ছিল।
বড় ভাই মোঃ ওয়াহিদুল হাসান দিপু বলেন, আওয়ামী লীগের পর চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে বিএনপির কিছু নেতার ষড়যন্ত্রে হেলালের কারামুক্তি আটকে যায় এবং তাকে সন্ত্রাসী তালিকায় নাম উঠায়। ধারাবাহিকভাবে ওয়ান ইলেভেন এবং আওয়ামী লীগ কৌশল করে ক্ষমতা দখল করে। এরমধ্যে হেলালের বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে, সবগুলো মামলায় আদালত তাকে খালাস দেয়। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকা এবং জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে দুই-তিনটি মামলায় জামিন না চেয়ে হেলাল কারাগারকেই নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়।

তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা ছিল, সেই সব মামলায় জামিন দেয় আদালত। শুধু আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা এবং কিছু মানুষের ষড়যন্ত্রে আমার ভাইয়ের নামের আগে সন্ত্রাসী লাগানো হয়েছে। এই করে আমার ভাইকে ২৪টি বছর আমাদের থেকে দূরে রাখা হয়েছে।’ যা অমানুবিক। কারাগারে থাকা অবস্থায় পড়ে গিয়ে হেলালের হাত ভেঙ্গে গেছে, এখন তার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নেওয়া হবে বলে জানান মোঃ ইমামুল হাসান হেলাল এর বড় ভাই মোঃ ওয়াহিদুল হাসান দিপু। তিনি তার ছোট ভাইয়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৭ আগস্ট ২০২৪

Share