কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের দেড়শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জ্বীন গাছ। যে গাছটি জুড়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। যে জ্বীন গাছটির ডাল কাটলে মানুষের ক্ষতি হয় বলে পুরোনো কথা প্রচলিত আছে।
মুক্তিযুদ্ধের সসময় যে গাছের নিচে এবং গাছটির সাথে মুক্তিযুদ্ধাদের বেঁধে গুলি করে হত্যা করেছে পাকিস্তানি রাজাকাররা। সেই গুলির ক্ষতচিহ্ন এখনো লেগে আছে ওই জ্বিন গাছটিতে।
আর দেড়শত বছরের পুরনো এ গাছটি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডস্থ আখনের ঘাট সড়কের পাশে রাজার খালের পাশে।
জানাযায়, এখন থেকে ২৫ বছর আগে রাজের ভাংতি নামকস্থানে একটি ব্রীজ ছিলো। আর ওই ব্রীজের পাশেই ডাল পালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পুরনো এই জ্বিন গাছটি।
স্থানীয় এলাকার ক’জন ব্যাক্তি জানান, দীর্ঘদিনের পুরনো এই জ্বিন গাছটির কেউ ডাল কাটলে তাদের অনেক ক্ষতি হতো। কয়েক বছর আগে ওই এলাকার হাফু মিজি নামে এক ব্যাক্তি জ্বিন গাছটির কয়েকটি ডাল কেটে মাছ ধরার জন্য নদীতে ঝাগ ফেলেন। কিন্তু হাফু মিজি আর সেই ডাল গুলো কখনো নদী থেকে তুলতে পারেননি। সেই থেকে আর কখনো ভয়ে কেউ জ্বিন গাছটির ডাল পালা কাটতে সাহস পাননি।
ওই এলাকার প্রবীন বয়সী কয়েকজন বৃদ্ধার সাথে আলাপকালে তারা জানান, এই জ্বিন গাছটির বয়স হবে প্রায় দেড়শত বছরেরও উপরে। তারা উঠতি বয়স থেকেই নাকি জ্বিন গাছটি এরকম দেখে আসছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার অলি উল্ল্যাহ অলু মিয়াজী ও ৬৫ বছর বয়সী সিরাজ বেপারীসহ ক’জন বৃদ্ধা চাঁদপুর টাইমসসকে জানান, ‘তারা বুঝের বয়স থেকেই এ জ্বিন গাছটি এমন দেখে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকাররা ওই জ্বিন গাছটির নিচে মুক্তিযুদ্ধাদের দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারতেন। মেম্বারের দাদা হোসেন আলী মিজিকেও এই জ্বিন গাছের নিচে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখনো গাছটির মধ্যে গুলির সেই ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। গাছটি যত মোটা হয়ে বেড়ে উঠছে, সেই সাথে গুলির সেই ক্ষতর গোল চিহ্নগুলো অনেক দীর্ঘ হচ্ছে। এভাবেই নানা ইতিহাসের সাথে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চাঁদপুর হানারচরের দেড়শত বছরের জ্বিনগাছ।’
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur