সরকার সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে কারিগরির একটি বিষয়ে পড়া বাধ্যতামূলক করার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আজ রোববার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষতা ছাড়া চাকরির নিশ্চয়তা নেই। আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের অনিহা রয়েছে। প্রকৃত অর্থে কারিগরিতে যারা লেখাপড়া করেছে তারাই বেকারের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে। সবাই এখন দক্ষতা খোঁজে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় দেশে মাত্র এক শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হতো কারিগরিতে। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ শতাংশে। আগামী ২০২০ সালে এর হার ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে।
অনুষ্ঠানে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী বলেন, কারিগরি শিক্ষার প্রতি সরকার জোর দিচ্ছে। আগামীতে অষ্টম শ্রেণিতে একটি করে ট্রেট কোর্স চালু করার বিষয় ভাবছে সরকার।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড যৌথ গবেষণার একটি পুস্তক প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চগড় টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. সৈয়দ আবদুল আজিজ গবেষণা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে আমাদের দক্ষ মানবসম্পদের কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষার সঙ্গে কর্মের সমন্বয় নেই। উন্নত দেশে কর্মের বাজারের সঙ্গে শিক্ষার যোগসূত্র থাকে এটা আমাদের দেশে প্রায় অনুপস্থিত। এখানে কোনো গবেষণা নেই। কোন খাতে কত জনসম্পদ লাগবে, তৈরি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বর্তমান ৫৮.১ মিলিয়ন কর্মোপযোগী মানুষকে ২০৩০ সালে ১২৮ মিলিয়নে রূপান্তর করতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম বলেন, ‘দেশে ভুরি ভুরি বিবিএ, এমবিএ তৈরি হচ্ছে। আসলে এসব দরকার আছে কী না? তার কোনো গবেষণা নেই। আমাদের প্রায় এক কোটি প্রবাসী শ্রমিক রয়েছে, তারা যে পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠায় তার চারগুণ আমরা এখানে বিদেশি শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষার উন্নতি হলে, আমাদের এই দৈন্যতা থেকে উত্তরণ ঘটবে।’