শাহরাস্তি সনদ জালিয়াতির দায়ে সহকারি শিক্ষক কারাগারে

শাহরাস্তি সরকারি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সনদ জালিয়াতের দায়ে কারাগারে। বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ণ কর্তৃপক্ষ এর সচিব ও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া সনদ তৈরী করে শাহরাস্তি সরকারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকুরী নেওয়ার অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

১০ আগস্ট মঙ্গলবার আদালতে জামিন চাইতে গেলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান জামান তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে। এর আগে গত ৫ মে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমাম হোসেন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

জানা যায়, শাহরাস্তি বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জাকির হোসেন ২০০৭ সালে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০ জুন ২০১৯ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর সরকারিভাবে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন তথ্যদি চাওয়া হয়। স্বারক নং, ৩৭.০৫.০০০০.০১০.০৫.০০১.১০.৩৫৩, মূলে বিদ্যালয় থেকে গত ০৬/১১/২০২০ ইং মো: জাকির হোসেন সহকারী শিক্ষক ইংরেজী, এর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের জন্য এ কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রের আলোকে নিবন্ধন পত্রটি যাচাই করে এ কার্যালয়ের স্বারক নং ৩৭.০৫.০০০০.০১০.০৫.০০২.২০.২৩১৯. তাং ২৪/১২/২০২০ যাচাই প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়।

প্রতিবেদনে সনদটি জাল ও ভূয়া বলে মন্তব্য করা হয়। জাকির হোসেনের দাখিলকৃত সনদটিতে তৎকালীন এনটিআরসিএ’র সচিব ও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। তার পত্রের সাথে সংযুক্ত প্রার্থীর আবেদনে সনদটি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে ইস্যু করা হয়েছে, মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সঠিক নয়। কেননা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে এনটিআরসিএ এর ২০০৬ সনে উত্তীর্ন প্রার্থীদের সনদ বিতরণের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।

সনদ বিতরণ শেষে শিক্ষাবোর্ড বিতরণ রেজিষ্টার ও অবিতরণকৃত সনদ এ কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। উক্ত রেজিষ্টার পর্যালোচনায় দেখা যায়, জাকির হোসেন পিতা: শহিদ উল্ল্যাহ নামীয় ১১০২০৯০৬ রোল নাম্বারধারীর সনদ আদৌ বিতরণ করা হয়নি বা জাকির হোসেন আদৌ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদ গ্রহণ করেননি। তিনি জাল সনদ দাখিল করে চাকরি নিয়েছেন। এছাড়া তিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেখাতে পারেন নি।

প্রতিবেদনে আরও মন্তব্য করা হয়, জাকির হোসেন প্রকৃত নিবন্ধন প্রার্থী নন। তিনি যদি প্রকৃত প্রার্থী হতেন তবে তিনি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রকৃত সনদ গ্রহণ করতেন। কিন্তু তিনি তা না করে একটি জাল সনদ তৈরী করেন। যা এনটিআরসিএ’তে রক্ষিত ফলাফলের প্রাপ্ত নম্বরের সাথে গরমিল পরিলক্ষিত হয়েছে।

জাকির হোসেন যে, ১১০২০৯০৬ নম্বর রোলধারী প্রকৃত প্রার্থী সে বিষয়ে কোন প্রমান দেখাতে পারেননি। এজন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বিদ্যালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়।

চতুর ওই শিক্ষক মামলার নির্দেশের সংবাদ জানতে পেরে গত ৬ এপ্রিল ২০২০ তারিখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে অব্যাহতি পত্র দিয়েছেন। পরবর্তীতে গত ৫ মে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমাম হোসেন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে শাহরাস্তি মডেল থানায় জাল ও ভুয়া সনদ দিয়ে চাকুরি করার অভিযোগে মামলা রুজু করেন।

আটক শিক্ষক জাকির হোসেনের বাড়ী শাহরাস্তি উপজেলার খেড়িহর গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত: শহিদ উল্ল্যাহ।

শাহরাস্তি প্রতিনিধি

Share