Chandpur Times Desk:
রিভিউ আবেদন দায়েরের মাধ্যমে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘কামারুজ্জামানের রিভিউ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির দিন ধার্যের জন্য আমরা আজই দরখাস্ত নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে যাব।’
কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা যেসব কথা বলেন, সেগুলো আদালত অবমাননা হওয়ার মতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আজ রিভিউ আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবীরা।
এদিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াত নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন আপিল বিভাগ কবে শুনবে তা জানা যাবে রোববার।
বৃহস্পতিবার কামারুজ্জামানের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির সর্বোচ্চ আদালতের রায় রিভিউয়ের জন্য সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষ শুনানির তারিখ চেয়ে আবেদন করলে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শুনানির দিন ধার্যের জন্য আগামী রোববার ঠিক করে দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, ‘চেম্বার আদালতে শুনানিতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আমরা বলেছি, এটা শুনানি হওয়া দরকার।
তখন আদালত বলেছে রোববার তারিখ জানিয়ে আদেশ দেওয়া হবে।’
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চারজন বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে সর্বমোট ৫৭৭ পৃষ্ঠার রায়ের কপি প্রকাশ করা হয়।
ওই দিন রাতে পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপিসহ লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যান ট্রাইব্যুনাল কর্তপক্ষ।
ওই দিনই কামারুজ্জামানকে মৃত্যদন্ড বহাল রেখে দেওয়া আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ে শোনানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, মানবতা বিরোধী অপরাধে মৃত্যদন্ডপ্রাপ্ত আসামির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
সে অনুযায়ী বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে রিভিউ আবেদন করলেন কামারুজ্জামান।
গত বছরের ৩ নভেম্বর বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।
বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সোহাগপুরে গণহত্যার দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ফাঁসির রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। রায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা বিভক্ত রায় দেন।
২০১৩ সালের ৯ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।