আন্তর্জাতিক

স্পেন থেকে আলাদা হয়ে কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা

অবশেষে স্পেন থেকে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা চেয়ে উত্থাপিত প্রস্তাব স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। স্পেনের কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি শাসনের আনার হুমকি উপেক্ষা করে শুক্রবার পার্লামেন্ট এ ঘোষণা দিলো।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ১৩৫-৭০ ভোটে পার্লামেন্টে এই বিল পাশ হয়েছে। বিলটির বিপক্ষে পড়েছে ১০ ভোট। আর দুটি ব্যালট পেপার খালি অবস্থায় বাক্সে ফেলা হয়েছে। এই ভোটের প্রতিবাদ জানিয়েছে স্যোশালিস্ট পার্টি, পিপলস পার্টি ও সিউড্যাড্যানস পার্লামেন্ট থেকে বের হয়ে যায়। বিরোধীদের দাবি কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুজদেমন সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে আগ্রাহ্য করছেন। কাতালোনিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ স্বাধীনতার বিপক্ষে।

এর আগে শুক্রবার সকালে স্পেনের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ অনুমোদনের জন্য বৈঠকে বসে।

এই অনুচ্ছেদের বলে কেন্দ্রীয় সরকার স্বায়ত্ত্বশাসিত কাতালোনিয়ায় সরাসরি শাসন চালুর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। সিনেটে দেওয়া ভাষণে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় কাতালোনিয়ায় সরাসরি মাদ্রিদের শাসন চালুর পদক্ষেপ অনুমোদন করতে সিনেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, কাতালান নেতা কার্লোস পুজদেমনসহ তার ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সব আঞ্চলিক মন্ত্রীকে তিনি বরখাস্ত করতে চান।

রাজয় বলেন, কোনও প্রতিকারই যখন থাকে না কেবল তখনই বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হয়। আমার মতে, এটি করা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। একমাত্র যে কাজটি করা যায় এবং করা উচিত তা হচ্ছে, আইন মেনে নেওয়া এবং তা মেনে চলা। কাতালান নেতারা আইন অগ্রাহ্য করছেন এবং গণতন্ত্র নিয়ে তামাশা করছেন বলেও এসময় মন্তব্য করেন রাজয়।

বার্সেলোনাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলছে, প্রধানমন্ত্রী রাজয়ের সিনেটে বক্তৃতার পরই পার্লামেন্টে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্বাধীনতাকামী রাজনীতিকরা। ‘মাদ্রিদ আলোচনার টেবিলে এগিয়ে না আসায়’ উত্থাপিত এই প্রস্তাবের শুরুতে বলা হয়- ‘আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী স্বাধীন কাতালোনিয়ার ঘোষণা দিচ্ছি’।

এই প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে উত্থাপনের পর বেশিরভাগ সদস্যই একযোগে ‘হ্যাঁ’ বলেন। প্রস্তাবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক ও সমাজবাদী রাষ্ট্র কাতালোনিয়ার জন্য সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান’ও রাখা হয়।

গত ১ অক্টোবর গণভোটের পর পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং গণভোট ইস্যুতে পরস্পরের স্বাধীনতা ঘোষণা ও স্বায়ত্তশাসন বাতিলের হুমকির ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সিনেটে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী রাজয়।

তিনি আবেগপূর্ণ ভাষণে সিনেটরদের উদ্দেশে বলেন, যখন কোনো পথই খোলা থাকে না, তখন সংবিধান সুরক্ষায় কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসনই বাতিল করতে হবে। এই পথ সুগম করতে কাতালান প্রেসিডেন্টসহ (কার্লেস পুজদেমন্ত) ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতাদের ক্ষমতা থেকে অপসারণ করতে হবে।

সুতরাং সিনেটকে সেরকম পদক্ষেপই অনুমোদন দিতে হবে। কাতালান স্বায়ত্তশাসন বাতিলে সংবিধানের ১৫৫ নম্বর অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নই একমাত্র উপায়।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১ : ৩৫ পিএম, ২৭ অক্টোবর, ২০১৭ শুক্রবার
এইউ

Share