ফরিদগঞ্জ পৌর মেয়র মো. মাহাফুজুল হকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন পৌর ৯ কাউন্সিলর।
পৌর ডাকবাংলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ৯ কাউন্সিলরের স্বাক্ষরিত অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী বরাবরে গত ২২ এপ্রিল ২০১৮ খ্রি. প্রেরণ করা হয়েছে। এবং এর অনুলিপি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রনালয়, স্থানীয় এমপি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখসচিব, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছেও পাঠানো হয়েছে।
এদিকে মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অনাস্থার সংবাদে পৌরবাসীর মধ্যে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়।
এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের আনিত অভিযোগের সত্যতা জানতে চেয়ে মুঠোফোনে আলাপকালে মেয়র মাহফুজুল হক চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও সড়যন্ত্রমূলক। রাজনৈতিক একটি প্রতিপক্ষ আমার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং আমাকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে মানহানিকর এমন একটি নাটক মঞ্চায়ন করেছে।
তবে কাউন্সিলরদের বেতন ভাতা সম্পর্কিত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘পৌরসভার রাজস্ব আয় কম থাকায় পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতেই অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে বিধায়, মেয়র-কাউন্সিলরদের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ ছাড়া সাবেক মেয়র প্রায় ৮০ লাখ টাকার ঋণ রেখে গেছেন। তা পরিশোধ করতে গিয়ে আমাকে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হয়েছে।’
এ সময় তিনি বেসক’জন কাউন্সিলরের প্রতি অভিযোগ তুলে বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকে আজও তারা পৌর পরিষদের কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন তো দুরের কথা পৌরসভাতেই আসেন নি। কাউন্সিলরদের এমন অসহযোগীতাসহ নানা প্রতিকুলতা স্বত্তেও সকলের সাথে সমন্নয়ের মাধ্যমে পৌরবাসীর সর্বোচ্ছ সেবা নিশ্চিত করতে আমি সর্বান্তক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করেছেন কাউন্সিলররা তার উপযুক্ত প্রমান উপস্থাপন করতে না পারলে আমি তাদের বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করবো। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতিকে নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়েছেন। অতএব কোনো প্রকার প্রমান উপস্থাপন ছ্ড়াাই প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও সড়যন্ত্রমূলক এ ধরণের বক্তব্যের ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি ফরিদগঞ্জ পৌরবাসী ও আমর সম্মানও ক্ষুন্ন হয়েছে।’
কাউন্সিলরদের অভিযোগের জবাবে মেয়র মাহফুজুল হক চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বুধবার (২৫ এপ্রিল) এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য তুলে ধরবো।’
প্রসঙ্গত, ফরিদগঞ্জ পৌর সভার মেয়র মো. মাহাফুজুল হকের বিরুদ্ধে ৯ কাউন্সিলররা হচ্ছেন, পৌর সভার প্যানেল মেয়র-১ ও কাউন্সিলর মো. খলিলুর রহমান, প্যানেল মেয়র-২ ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন, কাউন্সিলর মো. জামাল উদ্দিন, মো. ইসমাইল হোসেন সোহেল, মো. হারুনুর রশিদ, মো. মহসিন, মো. মুজিবুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর কুলসুমা বেগম, ফাতেমা বেগম।
এছাড়া প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর খতেজা বেগম আলেয়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট