কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ

রোজকার তরকারির ঝোল থেকে আধুনিক পেপার স্প্রের বোতল, পান্তা ভাত থেকে পিৎজার সিজনিং…কাঁচা মরিচের জার্নি যেমন আন্তর্জাতিক, তেমনই বৈচিত্র্যময়। চলুন জেনে নিই কাঁচা মরিচের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা মরিচের আদি নিবাস আমেরিকা, আরও বিশেষভাবে বলতে গেলে মেক্সিকো।

প্রাচীন অ্যাজটেকদের রান্নাবান্না যে মরিচ ছাড়া হতই না, তার অজস্র প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঝাল ও স্বাদের জন্য এটি এশিয়ায় বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় খাবারের অপরিহার্য উপকরণে পরিণত হয়। যার চাহিদা এমন অপরিহার্য তার গুণপনাও যে কম হবে না, বলাই বাহুল্য। অর্ধেক কাপ কাঁচা মরিচে থাকে ৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১.৫ গ্রাম প্রোটিন, ১ গ্রাম ফাইবার ও ০.১৫ গ্রাম ফ্যাট। এ ছাড়া মরিচে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, আয়রন ও পটাশিয়াম, যেগুলো নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রয়োজনীয়। এগুলো বাদেও মরিচের রয়েছে নানা উপকারিতা।

ব্যবহার : বিভিন্ন ধরনের রান্না ও মুখরোচক খাবার তৈরি ছাড়াও মরিচ আচার তৈরির উপাদান হিসেবেও ব্যবহার হয়। শুধু মরিচের আচার খেতেও বেশ সুস্বাদু।

উপকারিতা : এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে। হজমের সমস্যায় খেতে পারেন কাঁচা মরিচ। খুব তেল-মসলার রান্নায় ঝালের পরিমাণ কমিয়ে দিন। হালকা ঝাল হজমে সাহায্য করে। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে কাঁচা মরিচ। তাই উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলে আক্রান্ত রোগীরা পাতে মরিচ খেতে পারেন।

কাঁচা মরিচের বিভিন্ন উপকারী উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে-কাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না।
নিয়মিত দুটি করে কাঁচা মরিচ খেলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। এতে থাকা বেশকিছু উপকারী উপাদান একদিকে যেমন রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমিয়ে ফেলে, তেমনি ট্রাইগ্লিসারাইড যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।

কাঁচা মরিচে রয়েছে ক্যাপসিসিন নামক একটি উপাদান, যা ঝাল স্বাদের জন্য দায়ী। এই ক্যাপসিসিন শরীরের নানাবিধ উপকারেও লাগে। যেমনÑ এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মিউকাস মেমব্রেনের মধ্যে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানের সব বেরিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
স্ট্রেস কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে কাঁচা মরিচ। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া মাত্র এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্ট্রেস লেভেল কমে যায়।

২০ জুলাই ২০২৩
এজি

Share