ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় এক গৃহবধূকে তার স্বামীর বাড়ীর লোকজন নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার বিশারবাড়ী গ্রামের প্রবাসী সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে ইয়াছমিন আক্তার নামে ১৯ বছর বয়সী ওই গৃহবুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বিশারাবাড়ী গ্রামের প্রবাসী সাইফুল ইসলামের স্ত্রী ইয়াছমিন কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানাীন সীমানার পাড় গ্রামের আবদুল আউয়াল মিয়ার মেয়ে। তাকে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবী নিহতের স্বজনদের।
শনিবার দুপুরে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় কসবা থানা পুলিশ। এসময় নিহত ইয়াছমিনের শ্বশুর বাড়ীর কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিহত ইয়াছমিনের বাবার বাড়ীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত প্রায় ৮/৯ মাস আগে প্রবাসী সাইফুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয় ইয়াছমিনের। ছুটিতে এসে বিয়ে করে সাইফুল। তবে, করোনার কারনে পুনরায় প্রবাসে যেতে পারেননি তিনি।
এদিকে বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মোটা অংকের যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতো ইয়াছমিনকে। এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে সালিশও হয় একাধিকবার।
গত এক সপ্তাহ আগেও সালিশের মাধ্যমে ইয়াছমিনকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসে তার শ্বাশুরবাড়ির লোকজন। সপ্তাহ না যেতেই শনিবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে ইয়াছমিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের স্বজনদের তাকে দাবী হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে ইয়াছমিনের শ্বশুরবাড়ীর লোকজন।
এমনকি ইয়াছমিনের বাবার বাড়িতে খবর না দিয়ে ওরা শুধু পুলিশকে খবর দিয়েই সবাই আত্মগোপন করে। যদি তাদের কোনো দূর্বলতা না-ই থাকবে তাহলে তারা কেন পালিয়ে যাবে?
এদিকে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান স্বজনরা। অন্যদিকে পুলিশ বলছে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই শুধু গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে।
ইয়াছমিনের বাবা আউয়াল মিয়া জানান, ৩ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে মেয়ের জামাই সাইফুল ইসলাম। এর আগেও জমি বিক্রি করে প্রায় ৭ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি মেয়ের সুখের আশায়। গত শুক্রবার শশুরবাড়ীর লোকজন ইয়াছমিনকে যৌতুকের জন্য বেধড়ক পিটিয়েছে বলে টেলিফোনে তার বাবাকে জানায়। এবং টাকা না দিলে রাতেই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এসময় বাবার কাছে সে বাঁচার আকুতি জানায়।
নিহতের চাচা ইকবাল হোসেন জানান, নৃশংসভাবে আমার ভাতিজিকে মেরে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। কিন্তু তার স্বামীর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করতে চাইলে গ্রহন করছেনা কসবা থানা পুলিশ ।
কসবা থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত আসাদুল ইসলাম বলেন, বিশারাবাড়ী থেকে গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রতিবেদক:জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল,৪ অক্টোবর ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur