বিনোদন

কল্পনায় আমি আমার স্বামীকে দেখতে থাকি

প্রথমে তার পরিচালনায় বিজ্ঞাপনগুলো দেখে অবাক হতাম। ভাবতাম তার সঙ্গে যদি কাজ হতো আমার ভালো লাগতো। তারপর যখন ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেন তখন ইচ্ছেটা আরো প্রবল হলো। অবশেষে তার ফোন পেলাম। ‘রিকশা গার্ল’ ছবিতে কাজের প্রস্তাব পাওয়ার পরই রাজি হয়ে গেলাম। বলছি অমিতাভ রেজার কথা। তার পরিচালনায় এ ছবির কাজ কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে। মেকাপ ছাড়া পুরো ছবিতে কাজ করেছি।

ছবিটিতে আমি রিক্সা গ্যারেজের মালিক চরিত্রে অভিনয় করেছি। এই ধরনের গেটআপ নিয়ে আগে কোনো ছবিতে দর্শকরা আমাকে দেখেন নি। ভিন্নধর্মী এ চরিত্রটি দর্শকরা পছন্দ করবেন বলে আশা করছি। কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী গুণী অভিনেত্রী চম্পা।

শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘তিন কন্যা’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের জগতে কাজ শুরু তার। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পেয়েছেন দর্শকের ভালোবাসা। চলচ্চিত্রের সংকটময় মুহূর্তে এসেও বর্তমানে বেশ কিছু ছবিতে কাজ করছেন তিনি। এরইমধ্যে কয়েকটির শুটিংও শেষ করেছেন। চলচ্চিত্রের সিনিয়র অভিনয়শিল্পী চম্পা বলেন, বাস্তব জীবনে যে ধরনের সাজগোজ বা মেকাপ আমরা করি, অনেক সময় ফিল্মে তার চেয়েও বেশি দেখানো হয়।

অবশ্য চরিত্রের প্রয়োজনে এটার দরকার হয়। তবে বাস্তবধর্মী চরিত্রে যখন কাজ করি তখন গেটআপ নিয়ে ভাবি। তখন অভিনয়ের জন্য ভাবনাটা অনেকটা হেল্প করে। চুল, মেকআপ, পোশাকে দর্শকরাও বাস্তবতা খুঁজে পান। এই যেমন ‘জ্যাম’ সিনেমায় ফকিরের গেটআপ নিয়ে চ্যালেঞ্জিং একটি চরিত্রে কাজ করেছি। এই সিনেমাটিতে আমাকে অন্যরকম লুকে দেখবেন। অন্যদিকে চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমায় আমাকে চিত্রনায়ক সিয়ামের মার চরিত্রে দেখতে পাবেন। সিনেমাটি নিয়ে তিনি আরো বলেন, এ সিনেমায় আমার চরিত্রটি খুব সুন্দর।

একজন বিজনেস উইম্যানের চরিত্র। যার স্বামী নেই। তবে কল্পনায় আমি আমার স্বামীকে দেখতে থাকি। কবিতা আবৃত্তি করতে পছন্দ করে এমন একটি নারীর চরিত্র। তবে সেই নারীর জীবনে একটা কষ্ট আছে। তার ছেলেও মার অতীতের এই ঘটনাটা জানতো না। যখন জানতে পারে তখন মায়ের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। পরে তার সমাধানও হয়। দারুণ একটি গল্প এটি। এমনটা পাওয়া গেলে তো মার চরিত্রে অভিনয় করতেও ভালো লাগে। আর আমার ছেলের চরিত্রে সিয়ামও দারুণ অভিনয় করেছে। এদিকে এম রাহিম পরিচালিত ‘শান’ ছবিতেও সিয়াম আমার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছে। এ ছবির বাকি কাজ সামনে শুরু হবে।

এটিও বেশ যত্নের সঙ্গে নির্মাণ করছেন তরুণ নির্মাতা রাহিম। বর্তমানের সিনেমা কেমন হচ্ছে? দর্শক সিনেমা হলে কি আবার ফিরবে?

এসব প্রশ্নের জবাবে চম্পা বলেন, দর্শকের চিন্তা-ভাবনা ও পছন্দে পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের মধ্যে অনেকে ভালো কাজ করার চেষ্টা করছে। আগের পরিচালকরা অনেক ভালো কাজ উপহার দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করেছেন। বর্তমানে অনেক নির্মাতা ভালো কাজ করার চেষ্টা করছেন। অনেকে দর্শকের প্রশংসা পাওয়ার মতো কাজও উপহার দিচ্ছেন। তবে দর্শকের কথা ও এই জেনারেশনের গল্প নিয়েও সুন্দর পারিবারিক সিনেমা হতে পারে। আগের নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে সৃষ্টির ক্ষুধা থাকতো। এখন মাঝে মাঝে কিছু কাজ করতে গিয়ে এই সৃষ্টির ক্ষুধার বিষয়টি কম দেখতে পাই।

তিনি আরো বলেন, সকলে কাজ পাগল ছিল। এখন এই সিরিয়াস বিষয়গুলো সব সময় দেখতে পাচ্ছি না। দর্শকদের ভালো কাজ উপহার দেওয়ার জন্য সিরিয়াস হয়ে কাজের বিষয়টি খুবই জরুরি। আমি চাই বর্তমান সময়ে ভালো মানের কাজ বাড়তে থাকুক। যারা সিনিয়র ভালো অভিনয়শিল্পী তাদেরকেও নির্মাতারা ভালো কাজের জন্য ডাকুক। সকলে মিলে কাজ করলে আবারো সিনেমার সুদিন ফিরবে।

Share