Home / চাঁদপুর / করোনা শনাক্ত তরুনের আবেগময় স্ট্যাটাস
করোনা শনাক্ত তরুনের
করোনা শনাক্ত সিহাব।

করোনা শনাক্ত তরুনের আবেগময় স্ট্যাটাস

করোনা ভাইরাস নামে যে অসুখটি বর্তমানে সমগ্র বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছে, তার সম্পার্কে নিশ্চই সকলেই অবগত আছেন। ইতোমধ্যেই আপনারা নিশ্চই এও জেনে গেছেন যে, এই অসুখটি ক্ষমতাবান অথবা দুর্বলের পার্থক্য বুঝে না। বুঝে না ধনী-গরীব, হিন্দু কিংবা মুসলমান। তার কাছে সব মানুষ সমান। যে কোনো মানুষ যে কোনো মুহূর্তে করোনাক্রান্ত হতে পারেন। সমগ্র পৃথিবীতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই অসুখে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। আবার অনেকেই সুস্থ্য হয়ে ফিরছেন পরিবারের কাছে।

আমাদের দেশেও এর ব্যর্তয় ঘটেনি। দেশে করোনায় আক্রান্তের পাশাপাশি সুস্থ্য হবার সংখ্যা দীর্ঘ হচ্ছে। তাহলে করোনা আক্রান্তদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এতোটা পাষাণ কেনো? এই দেশে যাদের করোনা পজেটিভ তারা কি ভিন্ন জগতের মানুষ? করোনা হয়েছে বলে কি অনেক বড় পাপ হয়ে হয়েছে তাদের?।

আমার করোনা পজেটিভ। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমি এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ্য। আমার কোন syndrome নেই, নিজ বাড়িতে হোম কোয়ান্টাইমে আইসোলেসন আছি। ৭দিন পর আবার স্যাম্পল নিয়ে আবার পরিক্ষা করবে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ কেউ বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না।

মানুষ মরণশীল। মানবজীবনে একমাত্র চিরন্তন সত্য হলো মৃত্যু। বাকি সব মিথ্যে-মরিচিকা্ আর অনিশ্চয়তার খেলা। আমরা মানবজাতি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবো বলেই মহান স্রষ্টার কাছে প্রমিজ করে এসেছি। তাহলে ক্ষণিকের এই জীবন নিয়ে এতো বাহাদুরি কিসের। রোগ-ব্যধি মানুষের হবে, হতেই পারে। কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে, কেউ হ্রদরোগে, কেউ হার্টের রোগে। আল্লাহ আমাদেরকে রোগ দেন আবার তিনি চাইলে সুস্থ করেন।

বর্তমানে সবচাইতে ভয়ংকর রোগটি হচ্ছে করোনা ভাইরাস। বিশ্বের অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত এবং অনেক মানুষ ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন। কে কখন এ রোগে আক্রান্ত হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারন, এ ভাইরাসটি চোখেই দেখা যায়না। তাই কেউ যদি ৫০ টাকার মাস্ক আর আর ২০ টাকার গ্লাভস পরে নিজেরে সুপার হিউম্যান ভাইবা, নিরাপদ ভাইবা ফেলে সেটা পুরোপুরি ভুল ধারণা। তাই আমাদের সচেতন হওয়া খুবই জরুরী।তবে সচেতনতার সাথে সাথে আমাদের মানবিক হওয়াও জরুরী। কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে যায় তাহলে আমদের তার প্রতি সদয় হওয়া উচিত। আমরা তার কাছে না গেলেও দূর থেকে তাকে সাহস যোগাতে চেষ্টা করবো। আমরা যেনো তার প্রতি বা তার পরিবারের প্রতি অসদাচরণ না করি।আমরা তাদের আতঙ্কিত না করি। তারা তো আমাদেরই কারো না কারো আপনজন।

অথচ তিক্ত হলেও সত্য যে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখতে পাই। আমরা দেখছি যে, কেউ করোনা আক্রানত হলে সমাজ যেনো তার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করছে। তার এবং তার পরিবারের প্রতি অসদাচরণ করছে। কেউ কেউ অতি উৎসাহি হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি লগডাউন করে দেয়া, তার পরিবারকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবার উৎসবে মেতে উঠতে দেখছি।

দয়া করে আপনারা এসব কাজগুলো করবেন না। কারণ আমরা কেউই বর্তমানে পুরোপুরি সুরক্ষিত না। আমাদের যে কারোই হতে পারে এই ভয়ংকর করোনা ভাইরাস। আগেই বলেছি করোনা ক্ষমতাবান কিংবা দুর্বল চিনে না, হিন্দু কিংকা মুসলিম চিনে না, কেবল মানুষ চিনে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা সচেতনতা এবং মানবিকতার সাথে করোনা মোকাবেলা করার চেষ্টা করব। ইনশাল্লাহ।

চাঁদপুর তথা সারা দেশের জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে আমার জোর অনুরোধ, করোনা পজেটিভ ব্যক্তির প্রতি সমাজের সকল মানুষ যাতে সচেতনাতার পাশাপাশি মানবিক হয়। তাকে কিংবা তার পরিবারকে কেউ যাতে হেয় প্রতিপন্ন করতে না পারে। সে বিষয়টি আপনারা আরো জোড়ালোভাবে নজর দিবেন।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম,৭ মে ২০২০