গোটা পৃথিবী যখন করোনা ভাইরাসে থুবড়ে পড়েছে। চারিদিকে ভাইরাস নিয়ে চিন্তার শেষ নেই অথচ কৃষক আবুল কালামের চিন্তা ভাইরাস নয় সংসার চলবে কি করে! ফরিদগঞ্জ উপজেলার কৃষ্নপুর গ্রামে দেখা গেলো কৃষক আব্দুল খালেক করলাসহ বিভিন্ন সবজি গাছের আগাছা পরিস্কার করছেন।
করোান সম্পর্কে জানা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন “এই সব নিয়ে চিন্তা করছি না তবে শুনেছি গাড়ি-ঘোড়া চলছে না। হাটে বাজারে লোকজন কম। সবজি নিয়ে গেলে বেচা বিক্রি হবে কিনা ধানের জমিতে সার দিতে পারবো কিনা এসব নিয়ে চিন্তা হচ্ছে’।
কৃষক আব্দুল খালেক আরো বলেন, ‘সকালে খেয়ে মাঠে চলে যাই। সারাদিন মাঠে কাজ করি। ময়লা মাটি নিয়েই আমাদের কাজ হাত ধোয়াও হয় না। সন্ধ্যায় যখন বাড়িতে যাই গোসল করে খেয়ে নিই। আগের মতই সব কিছু করছি। করোনা ভাইরাসের কথা শুনেছি, কিন্তু এসব নিয়ে ভেবে বাড়িতে বসে থাকলে আমার পেট চলবে না’।
এদিকে টমেটো চাষী মোস্তফা বলেন, বেশ চিন্তায় আছি টমেটো নিয়ে। আজও টমেটো তুলেছি তবে দাম একটু কম। করোনা নিয়ে চিন্তা করতে পারছি না গরীব মানুষ আমরা কাজ না করলে ভাত জোটেনা পেটে। টমেটো তুলতে গেলে ময়লা শরীরে লেগে যায় ধোয়ার সময়টাও পাই না। ভাইরাস নিয়ে চিন্তা করছি না কিন্তু চিন্তা হচ্ছে টমেটো নিয়ে গাড়ি না চললে টমেটো বিক্রি করতে পারবো না।
এ সময় গ্রামের পথ দিয়ে অটোরিক্সা চালিয়ে যেতে দেখা গেলো দেইচর গ্রামের চালক আব্দুল মমিনকে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বললেন, ‘শুনেছি দেশে করোনা ভাইরাস হচ্ছে , পেটের তাড়োনায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছি। গাড়ি না চললে সংসার চালানো দায় হয়ে যাবে।
একটু সামনে গিয়ে দেখা গেলো দুইজন কৃষককে ধান গাছের আগাছা পরিস্কার করছেন। তাদের মধ্যেও আলাদা কোনো সচেতনতা দেখা যায়নি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন তারা। নেই কেনো মাস্ক বা কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিউলী হরি বলেন, চলমান পরিস্থিতে আমাদের কাছে জিআরের কিছু চাল রয়েছে। সারাদেশে এখনো পর্যন্ত লক ডাউনের ঘোষণা আসে নাই, সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের নির্দেশনা আসলে আমরা চেষ্টা করবো সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার পাশাপাশি বিত্তবানদেরকে সাথে নিয়ে যাহারা দিন এনে দিন খায় তাদের পাশে দাঁড়ানোর।
প্রতিবেদক : শিমুল হাছান, ২৪ মার্চ ২০২০