নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ মহামারির উৎস চীন নয়, বরং ভারত বা বাংলাদেশ থেকেই এটি ছড়িয়েছে- এমন প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করেছেন একদল চীনা বিজ্ঞানী।
সম্প্রতি চীনের সায়েন্স অ্যাকাডেমি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, করোনাভাইরাস উহানে ছড়িয়ে পড়ার আগে ভারত-বাংলাদেশে দেখা দিয়েছিল।
চীনের ওই গবেষকরা দাবি করেছেন, গত বছর এ অঞ্চলে তীব্র তাপদাহের সময় মানুষ ও বন্যপ্রাণীরা একই উৎস থেকে পানিপানের ফলে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তাদের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের মে থেকে জুন মাসে রেকর্ড দ্বিতীয় দীর্ঘতম তাপদাহ তাণ্ডব চালিয়েছিল উত্তর-মধ্য ভারত এবং পাকিস্তানে। এর ফলে ওই অঞ্চলে ভয়াবহ পানির সংকট সৃষ্টি হয়।
চীনা গবেষকদের কথায়, পানির অভাবে বানরের মতো বন্যপ্রাণীরা একে অপরের সঙ্গে ভয়াবহ লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছিল এবং অবশ্যই এটি মানুষ-বন্যপ্রাণী সংস্পর্শের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছিল।
চীনা গবেষক দলটি করোনাভাইরাসের উৎস খুঁজতে ফাইলোজেনেটিক বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তাদের মতে, সবচেয়ে কম রূপান্তরিত রূপটাই ভাইরাসের আসল রূপ হতে পারে।
এ ধারণার ভিত্তিতেই চীনা গবেষকরা দাবি করেছেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ উহানে হয়নি। এর বদলে ভারত এবং বাংলাদেশের মতো জায়গাগুলো, যেখানে কম রূপান্তরিত ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গেছে, সেখানেই হতে পারে এর আসল উৎস।
ভারত-বাংলাদেশের পাশাপাশি করোনার সম্ভাব্য উৎস হিসেবে অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, সার্বিয়া, ইতালি, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র এবং চেক রিপাবলিকেরও নাম বলেছেন চীনের ওই গবেষকরা।
তবে চীনা দের এ দাবির সঙ্গে একমত নন অনেক বিশেষজ্ঞ। গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির ভাইরাল জিনোমিক্স অ্যান্ড বায়োইনফরম্যাটিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডেভিড রবার্টসন চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রকে ‘খুবই ত্রুটিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ন্যূনতম রূপান্তরিত ভাইরাস সিকোয়েন্স শনাক্তকরণে লেখকদের দৃষ্টিভঙ্গি সহজাতভাবেই পক্ষপাতদুষ্ট। লেখকরা মহামারির বিস্তৃতি সংক্রান্ত উপাত্তগুলো এড়িয়ে গেছেন, যাতে চীনে ভাইরাসের উত্থান এবং সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া স্পষ্ট দেখা যায়।এ বিশেষজ্ঞের মতে, চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রটি সার্স-কভ-২ সম্পর্কে বোঝার বিষয়ে নতুন কিছুই যোগ করেনি।
বার্তাকক্ষ,২৮ নভেম্বর,২০২০;