করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ইতালি ফেরত হাসপাতালে ভর্তি দুদু মিয়া (৬৫) রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। পরীক্ষার মাধ্যমে নেগেটিভ এসেছে। তার অবস্থা খুবই ভালো বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.নুসরাত জাহান মিথেন।
তিনি জানান, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার শরীর থেকে জ্বর নেমে গেছে। বন্ধ হয়েছে পাতলা পায়খানাও। এখন স্বাভাবিক খাবারও খাচ্ছেন তিনি। এদিকে মতলব উত্তরে ইতালিফেরত হাসপাতালে ভর্তি দুদু মিয়া (৬৫) রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি এ সংবাদ আসায় এলাকায় মহান আল্লাহর নিকট শোকরিয়া প্রকাশ করেছেন অনেকে। এখন আতঙ্ক কেটে যাবে অনেকে মনে করছে। এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বুধবার দুপুরে এমন তথ্য জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুসরাত জাহান মিথেন। অন্যদিকে এ ভাইরাস নিয়ে এলাকায় কেউ যেনো আতঙ্ক ছড়াতে না পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার বিকেলে ইতালি থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধকে করোনাভাইরাস সন্দেহে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই সময় জ্বর এবং পাতলা পায়খানায় ভুগছিলেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য হাসপাতালের প্রধান ডা. নুসরাত জাহান মিথেন জানান, ইতালিফেরত করোনাভাইরাস সন্দেহে একজনকে যখন এখানে ভর্তি করা হয় তখন তাকে আলাদা একটি ইউনিটে নিয়ে রাখা হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আইইডিসিআরকে জানান।
এরপর সোমবার রাতেই ওই বৃদ্ধের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন রোগতত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একজন টেকনোলজিস্ট। তবে স্বস্তির কথা হলো হাসপাতালে ভর্তি এই রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তার শরীর থেকে জ্বর নেমে গেছে। বন্ধ হয়েছে পাতলা পায়খানাও। এখন স্বাভাবিক খাবারও খাচ্ছেন তিনি।
তিনি আরো জানান, ঢাকা থেকে আইইডিসিআর এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তাঁর করোনা ভাইরাস নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ইতালি থেকে বাংলাদেশে ফিরেন ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধ। তার বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের বাড়িভাঙ্গা গ্রামে। বিগত দুই দশক ধরে ইতালিতে বসবাস করছেন তিনি। তার এক ছেলে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার।
এদিকে চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, জেলায় করোনাভাইরাস ঠেকাতে এবং যদি কেউ আক্রান্ত হয় এমন রোগীদের জন্য ১০০ শয্যার আলাদা বিশেষ ইউনিট খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি, বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে ২১টি এবং সাতটি উপজেলায় আরো সাতটি করে মোট ৪৯টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, শুধু তাই নয় এই সময় জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত এমন রোগীদের এখন থেকে আলাদা রাখার বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো.মাজেদুর রহমান খান জানান, মাস্ক ও সেনেটাইজেশন সামগ্রী যেনো কোনো অবস্থায় বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্যে বিক্রি না করে সেই বিষয় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বাজার মনিটরিং এবং বাড়তি দামে বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় প্রচার ও প্রচারণারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কামাল হোসেন খান,১১ মার্চ ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur