চাঁদপুর সদর উপজেলার পর শীর্ষে হাজীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনা উপসর্গ ও করোনা পজেটিভ হয়ে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৫৯ জন ও মারা গেছেন ১২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ জনই হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্ধা।
এছাড়া গত দেড় মাসে ৪৮ জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গে মারা গেছেন। এর মধ্যে ৩৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
মৃত ১২ জনের মধ্য সোমবার (১৫ জুন) পর্যন্ত তিন জনের করোনা পজেটিভ আসে। এই ১২ জনের মধ্যে ৭ জনের বাড়ি পৌর এলাকায়। এছাড়া হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ২জন, কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নে ১ জন, হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে ১ জন এবং রাজারগাঁও ইউনিয়নের ১ জন রয়েছেন।
করোনা আক্রান্তে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- হাজীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও পৌরসভাধীন মকিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা বিদ্যা সাগর বনিক (৬৫), রনজিৎ সাহা (৬২) ও আবুল কাশেম (৪৮) এবং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের বলিয়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম (৫৫)।
পৌরসভাধীন মকিমাবাদ এলাকার আবুল বাশার ওরফে লেদা মিয়া (৮০) ও তার ছেলে হাজীগঞ্জ পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আউয়াল সর্দার (৫০), আলহাজ আব্দুল মান্নান (৮৫), ধেররা এলাকার আলহাজ আব্দুল লতিফ (৭৫)।
রাজারগাও ইউনিয়নের পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামের ফাতেমা বেগম (৪০), কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাজনাখাল-চাঁদপুর গ্রামের এনামুল হক ওরফে শাহজাহান কাজী (৫৫), সদর ইউনিয়নের বাউড়া গ্রামের আব্দুল মমিন (৫৮) ও সুহিলপুর-নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মাও. আবু তাহের (৪০)।
এছাড়া করোনা আক্রান্ত হয়ে হাজীগঞ্জের দুইজন বাসিন্দা রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তারা হলেন- জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বাকিলা ইউনিয়নের ছয়ছিলা গ্রামের বাসিন্দা কালী নারায়ণ লোধ এবং একই ইউনিয়নের বাসিন্দা মিথিলা (১৮)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল হাজীগঞ্জে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার পর থেকে (মঙ্গলবার ) পর্যন্ত উপজেলায় ৪৮ জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গে মারা গেছেন। এর মধ্যে ৩৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। এর মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেরিতে (প্রায় ৫ ঘণ্টা পর) জানার কারণে ৯ জন এবং প্রাথমিক তদন্তে করোনা উপসর্গ প্রমাণিত না হওয়ায় ৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
নমুনা সংগ্রহকৃতদের মধ্যে (সোমবার) পর্যন্ত ২৭ জনের রিপোর্ট এসেছে এবং অপেক্ষমান আছে ৮ জনের। এই ২৭ জনের মধ্যে ১২ জনের করোনা পজেটিভ এবং ১৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
উল্লেখ্য, উপজেলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫৯ জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত ১২ জন, সুস্থ হয়েছেন ১০ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২জন এবং নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ৩৩ জন।
চিকিৎসাধীন এই ৩৫ জনের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির ২য় বারের মতো পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছে এবং একাধিক ব্যক্তি শারীরিকভাবে সুস্থ হয়েছেন।
তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এইচ এম সোয়েব আহমেদ চিশতী জানান, হাজীগঞ্জে উপসর্গে ও শনাক্তকারীর সংখ্যায় জেলায় ২য় উপজেলায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
প্রতিবেদক : জহিরুল ইসলাম জয়, ১৬ জুন ২০২০