চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর এলাকায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার দুটি ডোজ গ্রহণকারীদের ০.৪৯ শতাংশ এবং শুধু প্রথম ডোজ গ্রহণকারীদের ০.৪৮ শতাংশ হারে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের একদল গবেষক।
১ জুলাই বৃহস্পতিবার গবেষকদলের প্রধান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২২ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত দুই মাসে চট্টগ্রামের সিভাসু ল্যাব ও চাঁদপুর কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবে মোট ১২ হাজার ৯৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ১৩৭ জন। পজিটিভ হওয়াদের মধ্যে এক হাজার ৯৫ জনকে গবেষণার আওতায় আনা হয় এবং তাদের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এক হাজার ৯৫ জনের মধ্যে ৯৬৮ জন করোনার টিকা গ্রহণ করেননি। বাকি ১২৭ জন করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। আবার এদের মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ জন এবং দুটি ডোজ গ্রহণ করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪। শতকরা হিসেবে প্রথম ডোজ গ্রহণ করে আক্রান্ত হন ০.৪৮ শতাংশ ব্যক্তি ও দুটি ডোজ গ্রহণ করে আক্রান্ত হন ০.৪৯.শতাংশ ব্যক্তি।
গবেষণায় দেখা যায়, টিকা গ্রহণ না করা রোগীদের মধ্যে ১৩৭ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৩ জনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট পরিলক্ষিত হয় এবং ৭৯ জনের অতিরিক্ত অক্সিজেন সাপোর্টের প্রয়োজন হয়। এ ছাড়াও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা সর্বনিম্ন ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়।
বিপরীতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের যথাক্রমে সাতজন ও তিনজন রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন স্বাভাবিক ৯৬.৭ শতাংশ ছিল এবং তাদের কারও শ্বাসকষ্ট হলে সর্বোচ্চ ২০ দিন স্থায়ী ছিল।
আবার টিকা গ্রহণ না করা ১৩৭ জনের মধ্যে ১০ জন মৃত্যুবরণ করেন এবং সাতজনের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের (আইসিইউ) সেবা প্রয়োজন হয়। বিপরীতে টিকা নেয়া কেউ মৃত্যুবরণও করেনি এবং কারও আইসিইউ সেবার প্রয়োজন হয়নি।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, টিকা গ্রহণ না করা করোনা রোগীদের মধ্যে যারা পূর্বে থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তাদের সংক্রমণের হার ৭৬.৭ শতাংশ এবং টিকা গ্রহণকারীদের হার ১২ শতাংশ পরিলক্ষিত হয়।
জানতে চাইলে গবেষক দলের প্রধান ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, ‘গবেষণায় যেটি দেখেছি, টিকা গ্রহণকারীরা খুব অল্পসংখ্যক আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত হলেও তাদের পূর্বে শারীরিক জটিলতা না থাকলে এবং বয়স কম হলে মৃত্যুঝুঁকিও কম থাকে। তাই যত দ্রুত সম্ভব বয়স্কদের টিকার আওতায় আনা উচিৎ হবে।’
সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন- প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. মোহাম্মদ খালেদ মোশাররফ হোসেন, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
ঢাকা ব্যুরো চীফ,১ জুলাই ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur