Home / উপজেলা সংবাদ / কচুয়া / করোনাকালে কচুয়ায় কেউ খোঁজ রাখেনি মানসিক ভারসাম্যহীন ও প্রতিবন্ধিদের
কেউ খোঁজ রাখেনি মানসিক, মস্তিষ্ক বিকৃত পাগল নামধারী

করোনাকালে কচুয়ায় কেউ খোঁজ রাখেনি মানসিক ভারসাম্যহীন ও প্রতিবন্ধিদের

পাগল হলেও ওরাও মানুষ। ক্ষুদার জ্বালা সবারই আছে। জন্মগত ভাবে কেউ পাগল হয়ে জন্ম গ্রহন করেননি। পৃথিবীর নিষ্ঠুর কোন কোন কারনে মানুষ পাগল-ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধি হয়। মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ সমাজের প্রতি সব সময় অবহেলা ও নিষ্ঠুর আচরণ থেকে সমাজ এখনো পিছ পা হয়নি। বলতে গেলে সমাজের করুনা নিয়ে এই পাগলরা বেঁচে থাকে। এদের নিকট জীবন অধিকার বেঁচে থাকার গুরুত্ব কিংবা মৃত্যুর হতাশা কিছুই নেই। আর নেই কোন চাওয়া পাওয়া কিংবা আশা আকাঙ্খা।

জীবন মৃত্যু যেন এদের নিকট সমান্তরাল। আমরা অনেকেই তাদের বৈশিষ্টের সাথে মিল রেখে একেকটা নাম দিয়ে থাকি। তাদের আলাদা কোনো পরিচয় নেই, ব্যক্তিত্ব নেই। নির্দিষ্ট কোনো থাকার স্থান নেই। মহামারী করোননায় দেশ লকডাউন হওয়ার জায়গা নেই। কোয়ারেন্টাইন মানার কোনো বালাই নেই। তারা রাস্তা কিংবা বিভিন্ন বাজারে ছিলেন এবং এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাস্তাতেই আছেন। হয়তো করোনা জয়ের পরে তারা রাস্তাতেই পরে থাকবেন। আবার কেউ কেউ হয়তো করোনায় কিংবা পেটের ক্ষুধায় চলেও যেতে পারেন না ফেরার দেশে।

করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে আছে উপজেলার বিভিন্ন বাজারের রেস্টুরেন্ট, চায়ের স্টলসহ অন্যান্য খাবারের দোকান। মূলত খাবারের দোকান গুলোই ছিলো ছিন্নমূল পাগলদের পেট পুরে খাওয়ার একমাত্র ভরসা। ভারসাম্যহীন এসব মানুষদের কেউ খবর রাখেনি। তাই তারা এখন খেয়ে না খেয়েই ভবখুরে খুরছেন তারা।

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কচুয়া, সাচার, পালাখাল, মাঝিগাছা, রহিমানগরসহ প্রতিটি বাজারেই দু’চারজন করে প্রায় ১৫/২০জন পাগল (ভারসাম্যহীন) ও শারীরিক প্রতিবন্ধি বসবাস করছেন। মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে এখন বিভিন্ন হোটেল ও দোকান বন্ধ হওয়াতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন এসব মস্তিষ্ক বিকৃত পাগল নামধারী মানুষেরা।

কচুয়া উপজেলার পালাখাল গ্রামের বাসিন্দা মো. শরীফ হোসেনকে চিনে না, এমন লোক খুবই কম। সে গত ৮-৯ বছর ধরে মানসীক ভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে সাচার-পালাখাল-কচুয়া বাজারে ঘুরা ফেরা করছেন। দিনে মানুষের দ্বারে দ্বারে যা পায় তা দিয়ে কোন রকম খেয়ে বেচে আছেন। তবে তার একটি ডায়লক হচ্ছে, বিশ্বের সব ব্যাংক আমার। সব টাকায় আমার নাম ‘শরীফ’ লেখা রয়েছে। বিশ্বের সব ব্যাংকের টাকা তার হলেও চাহিদা কিন্তু কম, এ বলে পরিচিত ব্যক্তিদের বলেন, ভাই দশ টাকা দেন। আর দশ টাকা পেয়েই চলে যায়।

আর এসব মস্তিষ্ক বিকৃত পাগল নামধারী মানুষের সেবায় এগিয়ে এসে মানবিকতার পরিচয় দিতে প্রশাসন, ধনার্ঢ্য ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সচেন মানুষ।

প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু,২৯ জুন ২০২০