চাঁদপুরে আপন এর উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ

‘আমরা পর নই’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে পথ চলা স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন আপন এর উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে শীতার্তদের মাঝে মাসব্যাপী কম্বল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন হলরুমে অর্ধশতাধিক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপের এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ।

আপনের প্রতিষ্ঠাতা ও আহবায়ক রোটারিয়ান ডাক্তার রাশেদা আক্তারের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আশিক বিন রহিমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী মাস্টার, আপনের উপদেষ্টা রোটারিয়ান ডাক্তার মাসুদ হাসান, চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কেএম মাসুদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের আজকের এই প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মুক্তিকামী মানুষ মাতৃভূমি স্বাধীন করতে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। যার কারণে মাত্র ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন পতাকা অর্জন করেছি। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, তোমরা দেশকে ভালবাসবে, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করবে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা বাস্তবায়নে দেশ এবং মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে। আমাদের জাগতিক কর্মকাণ্ড যেন হয় মানুষ এবং মানবতার কল্যাণে।

রণাঙ্গনের এই বীর যোদ্ধা বলেন, সামাজিক সংগঠন আপন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে তারা করোনার দুর্যোগে অসহায় মানুষদের যেভাবে খাদ্য এবং অক্সিজেন সহায়তা দিয়েছে তা চাঁদপুরবাসীর মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এই সংগঠনের কার্যক্রমকে আমি অন্তর থেকে সাধুবাদ এবং অভিনন্দন জানাই। এবার তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিব শতবার্ষিকীকে সামনে রেখে মাসব্যাপী অসহায়দের মাঝে কম্বল বিতরণ করছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানোয় আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সংগঠনটি সকলকে ধন্যবাদ জানাই।

সভাপতির বক্তব্যে আপনের প্রতিষ্ঠাতা ও আহবায়ক রোটারিয়ান ডাক্তার রাশেদা আক্তার বলেন, মানুষ থেকে যেমন মানবতার সৃষ্টি, তেমনি মানুষ দ্বারাই সেই মানবতার ধ্বংস করা হয়। মানবতা তখনই সবোর্ৎকৃষ্ট পযাের্য় অবস্থান করে যখন তা পরিপূণর্ভাবে যথাথথ স্থানে প্রয়োগ করা যায়। অন্যথায় মানবতা কথাটির প্রকৃত কোনো অর্থ প্রকাশ পায় না। একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে আমাদের প্রত্যকের উচিত মানবতার কল্যানে কাজ করা। মানুষের জন্য কিছু করার মতো তৃপ্তি অন্য কিছুতে নেই।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের মহান ত্যাগের কল্যানে আজকে আমরা স্বাধীন মানচিত্র পেয়েছি। তাই সবার প্রতি অনুরোধ থাকবেন, আপনারা মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান করবেন। তাঁদের মনে কষ্ট হয়, এমন কোন কথা কেউ বলবেন না। এই বীর সন্তানরা যদি তাদের জীবনকে বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ না করতেন তবে আকজে আমরা স্বাধীনভাবে জীবন-যাপন করার অধিকার পেতাম না।

অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আপনের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. আল-আমিন মুন্সি, সম্মানিত সদস্য মুরাদ হাসান, সাঈফ পাটোয়ারী, মিশকাত খান, জাকারিয়া, নাসির, প্রমুখ।

স্টাফ করেসপন্ডেট

Share