নারী

কবি সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ

বাঙালি নারীর মানবাধিকার আন্দোলনের পুরোধা মহিয়সী কবি সুফিয়া কামালের জন্মদিন আজ সোমবার ২০ জুন ।

তিনি ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আব্দুল বারী। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও মা সাবেরা বেগমের কাছেই বাংলা পড়তে শেখেন এ মহিয়সী নারী।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি সুফিয়া কামালের ১০৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। শনিবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘সুফিয়া কামালের সাহিত্য : মানবতাবাদ ও নারীর অবস্থান’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বেগম আখতার কামাল স্মারক বক্তৃতা দেবেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বক্তৃতানুষ্ঠান শেষে ৮ জন বিশিষ্ট নারীকে সুফিয়া কামাল সম্মাননা দেয়া হবে। এ বছর সুফিয়া কামাল সম্মাননা পাচ্ছেন,ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুন, সুফিয়া আহমেদ,রওশন আরা বাচ্চু ও প্রতিভা মুৎসুদ্দি,বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মিলি বিশ্বাস,বেলাবোর সফল কৃষক ফরিদা বেগম,সাভারের সফল শ্রমিক আরতী রাণী এবং কাউখালীর নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মমতা শিকদার। কবির স্মরণে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ইফফাত আরা দেওয়ান ও বুলবুল ইসলাম।

কবি সুফিয়া কামাল তার সাহিত্য চর্চ্চার পাশাপাশি নারীমুক্তি,মানবমুক্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে গেছেন। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনেও যোগ দেন। ৬৯’এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। একাত্তরের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘তমখা এ ইমতিয়াজ’ উপাধি বর্জন করেন। তিনি ছিলেন একজন একনিষ্ঠ সংগঠক। ১৯৭০ সালে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনের ডামাডোলের মধ্যেই তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৫৬ সালে গঠিত শিশুদের সংগঠন কচি কাচার মেলার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি দেশবিভাগের আগে ‘বেগম’পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

কবি সুফিয়া কামালের কাব্য প্রতিভার প্রকাশ ঘটে ১৯২৬ সালে সওগাত পত্রিকায় প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে । তার রচিত সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে কবিতা,গল্প ও ভ্রমণ কাহিনী। তার রচিত‘একাত্তুরের ডায়েরি’একাত্তরে বাঙালী জীবনের অকথিত চিত্র তুলে ধরেছে।

সাহিত্য সৃষ্টি, বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক,স্বাধীনতা দিবস পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ প্রায় ৫০টির ও বেশি পুরস্কার লাভ করেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন আপোষহীন। কবি সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর মৃত্যু বরণ করেন। তিনিই প্রথম বাঙালী নারী যাঁকে মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।

নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৬ :১০ পিএম,১৯ নভেম্বর ২০১৭,সোমবার
এজি

Share