Home / জাতীয় / পাঁচবারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী কবির বকুলকে গ্রেফতারে বাসায় পুলিশ
কবির বকুলকে

পাঁচবারের জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী কবির বকুলকে গ্রেফতারে বাসায় পুলিশ

পাঁচবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী চাঁদপুরের কৃতি সন্তান গীতিকার কবির বকুলকে গ্রেপ্তার করতে তার বাসায় গিয়েছে পুলিশ। ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে তার স্ত্রী কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নির ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টে মুন্নি লিখেন, ‘বাসায় পুলিশ এসেছে কবির বকুলকে গ্রেপ্তার করতে। আমার বাচ্চাগুলো শক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে!! জীবনে এমন অনুভূতির সামনে পড়তে হবে-তা কখনো কল্পনাও করিনি!!’

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কবির বকুলের বাসায় পুলিশ যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ভিত্তিতে তার বাসায় পুলিশের একটি টিম গিয়েছিল। কিন্ত তাকে বাসায় পাওয়া যায়নি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি বলেন, ‘পুলিশ দেখে বাচ্চারা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হবো ভাবিনি। পুলিশ বাচ্চাদের সঙ্গেও কথা বলেছে। জানতে চেয়েছে, ওর বাবা (কবির বকুল) কোথায়? এরপর কিছুক্ষণ থেকে পুলিশ চলে গেছে।’

প্রসঙ্গত, গত ১ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ক্যাম্পাসে কিশোর আলোর অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নাইমুল আবরার। এ ঘটনায় শুরু থেকেই আয়োজকদের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

আরো দেখুন- ৫ম বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন চাঁদপুরের কৃতিমান কবির বকুল

এ ঘটনায় গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাময়িকী কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন আবরারের বাবা মুজিবুর রহমান। পরে গত ১৬ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলার অপর আসামিরা হলেন কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামানিক শুভ, মহিতুল আলম পাভেল, শাহপরান তুষার, জসিম উদ্দিন অপু, মোশারফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হায়দার।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৬ সালের ২১ নভেম্বর চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন কবির বকুল। কুড়ি বছর বয়স থেকে কবিতা ও গান লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত তিনি। ১৯৮৮ সালে ১৩টি গান লিখে কণ্ঠশিল্পী তপন চৌধুরীকে দেন তিনি।

সেখান থেকে দুটি গান পৃথক দুটি অ্যালবামে আসে। এর মধ্যে ‘কাল সারারাত তোমারই কাঁকন যেন মনে মনে রিনিঝিনি বেজেছে’ গেয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু। আর ‘পথে যেতে যেতে খুঁজেছি তোমায়’ কণ্ঠে তোলেন নাসিম আলী খান।

১৯৯৪ সালে ‘অগ্নি সন্তান’ চলচ্চিত্রে প্রথম গান লেখেন কবির বকুল। এখন পর্যন্ত তিনি আটশ’রও বেশি চলচ্চিত্রের গান লিখেছেন।

এর মধ্যে জনপ্রিয় তালিকায় আছে ‘যায় দিন যায় একাকী’, ‘কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে’, ‘আমার মাঝে নেই এখন আমি’, ‘আসবার কালে আসলাম একা’, ‘আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে’, ‘তোমারে দেখিলো পরানো ভরিয়া’, ‘একটা চাঁদ ছাড়া রাত আঁধার কালো’, ‘ও প্রিয় আমি তোমার হতে চাই’, ‘আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো জানো না’, ‘বলো না কেনো ওই আকাশ নেমে আসে’, ‘তোমার জন্য এক কাপ চা’ ইত্যাদি।

চলচ্চিত্র ও অডিও অ্যালবাম মিলিয়ে কবির বকুলের লেখা গানের সংখ্যা পাঁচ হাজারের বেশি। অডিও অ্যালবামের গানগুলোর মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছে ‘কেনো এই নিঃসঙ্গতা’, ‘ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর’, ‘পৃথিবীর মতো হৃদয়টাকে’, ‘আমার এক নয়ন তো দেখে নারে’ প্রভৃতি।

বার্তা কক্ষ, ১৮ জানুয়ারি ২০২০