কবর থেকে তিনদিন পর জীবিত উঠে এলেন ‘জিন্দাবাবা’, এরপর আগুন চিল্লা দেবেন

হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুকুরে ভেসে বেড়িয়েছেন। দেখেছে সবাই। এরপর ‘জিন্দাবাবা’ নামে পরিচয় পান জিতু মিয়া। তিনি কবরে ‘চিল্লা’ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনদিন কবরে থাকার পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে সবার সামনে ওঠানো হয়।

কবর থেকে বের হয়ে জিতু মিয়া বলেন, ‘আগামী বছর আমি আগুনে চিল্লা দেব।’

হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পুকুরে ভেসে বেড়িয়েছেন ‘জিন্দাবাবা’

জিতু মিয়ার ইচ্ছে অনুযায়ী গত ২৭ মার্চ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাথারিয়া গ্রামে তিনদিনের চিল্লায় যাওয়ার দিন ঠিক করা হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক গ্রামের মেহেদী মিয়ার পুকুরপাড়ে একটি ঘর তৈরি করা হয়। ওই ঘরে মাটি কেটে কবর খোঁড়া হয়। সামনে থেকেই সব তদারকি করেন জিতু মিয়া। কবরের ওপর সমান করে বাঁশও দেওয়া হয়। বাঁশের ওপর পাটি বিছানো হয়। একপর্যায়ে সবাই মিলে জিতু মিয়াকে কবরে ঢুকিয়ে দিয়ে পাটির উপর মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়। সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল ৩০০ গ্রাম আঙ্গুর আর একটি বিস্কুটের ‘বয়াম’। তাঁর নির্দেশ মোতাবেক আজ মঙ্গলবার তাঁকে কবর থেকে বের করা হয়।

এদিকে আজ কবর থেকে তোলার খবরে নয়াপাথারিয়া গ্রামে ভিড় জমে যায়। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে জিতু মিয়ার কাণ্ডকীর্তি দেখতে। কবরে প্রবেশের আগে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক কথাও শুনিয়েছেন। আর এ কারণে বিপুল মানুষ তাঁর ভক্তও হয়েছে। আর গত রোববারই ভক্তরা তাঁর জন্য টাকা-পয়সা, খাবার নিয়ে ছুটে এসেছে এ গ্রামে।

গত তিনদিন জিতু মিয়ার স্বজনসহ অন্যরা অপেক্ষা করেছেন বেশ উৎসুক মন নিয়ে। আজ মঙ্গলবার ছিল তৃতীয় দিন। সকাল থেকেই পুকুর পাড়ের ওই প্রাঙ্গণে মানুষ ভিড় জমায়।

দুপুর ২টার পর কবরের মাটি সরানো হয়। এরপর চাটাই। আর চাটাইয়ের নিচে বাঁশ। দুই-তিনটা বাঁশ সরাতেই স্থানীয় বাসিন্দারা চিৎকার দিয়ে ওঠেন, ‘জিন্দাবাবা বেঁচে আছেন।’ এরপর দুই ব্যক্তি গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা জিতু মিয়াকে ওপরে তুলে নিয়ে আসেন।

জিতু মিয়া এরপর পুকুরে যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানান। শরীর থেকে কাপড় খুলে নিতে সাহায্য করে ভক্তরা। তারপর তিনি পুকুরে নামেন। যথারীতি ভেসে বেড়ান। ততক্ষণে পুকুরের চারদিক লোকারণ্য।

পুকুর থেকে ওঠার পরই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয় জিতু মিয়ার। তিনি বলেন, ‘আমার ওপর নির্দেশ ছিল ১২ বার কবরে চিল্লা নেওয়ার। আমি নিয়েছি।’ শ্বাস নিতে কষ্ট হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ‘না।’ তিনদিন কিছু খাননি বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিলে আর কোনো কিছু খাওয়া লাগে না। গিয়ে দেখেন ওখানে প্রস্রাব, পায়খানাও নেই।’

জিতু মিয়া বলেন, ‘সাধনায় মাটিতে থাকা যায়, পানিতে ভাসা যায়। আগুনেও থাকা যায়। সামনে যদি বেঁচে থাকি আগুনের চিল্লায় যাব।’ বিষয়টি ভালোভাবে জানতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জিতু মিয়া আরো বলেন, ‘আগামী বছর আমি আগুনের মধ্যে থাকব।’

||আপডেট: ০২:১৫  অপরাহ্ন, ৩০ মার্চ ২০১৬, বুধবার

চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর

Share