চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতেমা (৪০) নামের এক গৃহবধূ মারা যা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান। তার বাসা চাঁদপুর শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকায়। তার স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর।
মৃতের মরদেহ দাফনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, তার এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্মসূত্রে চাঁদপুর শহরে বসবাসকারী জাহাঙ্গীর হোসেনের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। তবে তার শ্বশুরবাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নে।
কিন্তু তার স্ত্রীর অনাকাঙ্খিত এমন মৃত্যুর ঘটনার পর শ্বশুরবাড়িতে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। তাতে বাধা দেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাদী। এমন পরিস্থিতিতে চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় ইউপি মেম্বার ইসমাইল হোসেনের অমানবিক আচরণে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
পরে রাজারগাঁও গ্রামের বাড়িতে রাতে কবর খোঁড়তে লোক না পাওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও কচুয়া সার্কেল) আফজাল হোসেন কবর খোঁড়েন। এসময় তাঁকে কবর খোঁড়তে সহযোগিতা করেন উপ-পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সিফাত, জানাজা ও দাফন করা টিমের দায়িত্বে ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মুখপাত্র মাওলানা যোবায়ের আহমেদ।
এ টিমে থাকা সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সিফাত চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘কবর খোঁড়া থেকে শুরু করে জানাযা ও দাফন কার্য শেষ করতে করতে সেহরি শেষ সময় পর্যন্ত লেগে যায়। পরে সার্কেল মহোদয়সহ সেহরিতে আমরা শুধু পানি পানের সময় পেয়েছি। টিমের সবাই শুধু পানি দিয়েই আজকের রোজা শুরু করতে হলো।’
করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী নারী সম্পর্কে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিবুল আহসান চৌধুরী জানান, শুক্রবার রাত ৯ টার ওই নারী জ্বর, গলা ব্যাথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসেন। পরে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ৯টায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
চাঁদপুরের করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, ‘মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে করোনা টেস্টের জন্য। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে মৃত মহিলা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা। তবে তার মধ্যে করোনার উপসর্গ বিদ্যমান ছিল।’
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট, ২ মে ২০২০