হাত-পা নেই তারপরও একাগ্রতা আর প্রচেষ্টায় এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র আসিফ করিম আলিফ। হুইল চেয়ারে বসে দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখেই জিপিএ -৫ পেয়েছে আসিফ। কম্পিউটারও চালাতে পারদর্শী এই শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।
বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু জানান, আসিফ করিম আলিফ বগুড়া শহরের মালতিনগরে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ওই শ্রেণীতে মেধাতালিকায় বৃত্তিও পেয়েছিল। পিএসসিতে সাফল্য পাওয়া ছেলেটি এই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিও হয় মেধা তালিকায়। আমরা তার বিষয়ে কোনো অতিরিক্ত কিছুই করিনি। সে অনেক মেধাবী। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সে। তার কাছে বিজ্ঞানভিত্তিক ও কম্পিউটার বিষয়ক নানা প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে উত্তর পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, আসিফ প্রতিদিন স্কুলে হুইল চেয়ারে করে আসতো। পরীক্ষার ফলাফলের দিনেও সে হুইল চেয়ারে করে আসে। সে হুইল চেয়ার ছাড়া চলাচল করতে পারে না। তার হাতের কনুই পর্যন্ত এবং পায়ের উরুর উপরিভাগ রয়েছে। কিন্তু তাকে কেউ কখনই অবহেলা করেনি। সে নিজ মেধায় এগিয়ে যাচ্ছে। সে একদিন সবাইকে ছেড়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশাল্লাহ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া শহরের মালতীনগর পাইকাড়পাড়ায় নানা-নানি ও মামাদের কাছে বেড়ে ওঠে আসিফ করিম আলিফ। তার বাবা মা ঢাকায় চাকরি করেন। ফলে আসিফ বগুড়ায় নানা-নানির কাছে থাকেন। সে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ থেকে ঘণ্টা করে পড়েছে। তার নানা সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত শহীদুর রহমান তাকে স্কুলে ও প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে সহযোগিতা করেন। তার খাবার, গোসল এবং অন্যান্য কাজে নানি এবং মামারা তাকে সহযোগিতা করেন।
আসিফ করিম আলিফ জানায়, সে কনুই দিয়ে লিখতে পারে। লিখতে তার কোনো সমস্যা হয় না। বাবা-মা চাকরি করেন তাই নানার কাছে থেকে লেখাপড়া করে সে। নানা-নানি এবং মামারা তাকে সহযোগিতা করে। স্কুলের প্রতিটি বন্ধু তার খোঁজখবর নেয় এবং তার কাজে সহযোগিতা করে। সে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারে। তার সব কিছু স্বাভাবিক থাকলেও কেবল দুই হাত ও পা নেই। না থাকার কোনো কষ্ট নেই। তার ইচ্ছে সে একদিন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবে।