চাঁদপুরে করোনার সংক্রমণরোধে আরো কঠোর হচ্ছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ৩১ তারিখ পর্যন্ত সব যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১৭ মে রোববার জেলা শহরে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে। তাদের অভিযানে মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় প্রধান সড়ক ও বিপণী বিতানগুলো।
রোববার দুপুর ১২টায় শহরের ইলিশ চত্বর, শপথ চত্বর, কোর্ট স্টেশন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, জেএমসেনগুপ্ত সড়ক এবং পালবাজার এলাকায় জনসমাগম এড়াতে সাঁড়াশি অভিযানে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল।
এছাড়াও মাইকিং করে বিভিন্ন দোকান ও বিপণী বিতানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। একই সঙ্গে যারা অপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে শহরে নেমেছেন, তাদেরকে দ্রুত বাসাবাড়িতে চলে যেতে বলা হয়।
প্রচার মাইকে জানানো হয়ে, এখন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শহরে কোনো প্রকার সি এন জি স্কুটার, অটো বাইক, ইজি বাইক এমন কি ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচল করা নিষিদ্ধ থাকবে। পাশাপাশি সকল মার্কেটে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।এ নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।
চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী জানান, আগামীকাল সোমবার ভোর থেকে শহরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে কোনো মানুষ বিনা প্রয়োজনে শহরে প্রবেশ করতে না পারে। তবে ওষুধসহ অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী ক্রয় করতে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে যে কেউ শহরের সড়কে বের হতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, করোনার বিস্তার রোধে গত ৮ এপ্রিল গোটা চাঁদপুর জেলায় লকডাউন ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান। কিন্তু প্রশাসন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু হলেও সাধারণ মানুষের লাগাম টেনে ধরা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
এমন পরিস্থিতিতে চাঁদপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামালের নির্দেশে আগামীকাল সোমবার থেকে আরো কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে চাঁদপুর জেলায় এই পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশসহ ৭০ জন করোনা পজিটিভে আক্রান্ত হন। তারমধ্যে চারজন মারা যান।
আর গত দুই মাসে বিদেশ এবং দেশের বিভিন্নস্থান থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরা প্রায় ১০ হাজার মানুষের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, ঈদে আগে থেকেই যদি কঠোর নজরদারি না হয়, তাহলে বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে অন্যত্র থেকে চলে আসা মানুষের কারণে এখানে করোনা পরিস্থিতির আরো বিস্তার ঘটতে পারে। তাই এখন থেকেই সংশ্লিষ্ট সবাইকে তৎপর থাকতে হবে। না হয়, আগামীতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমাদেরকে।
প্রতিবেদক : আশিক বিন রহিম, ১৮ মে ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur