পান থেকে চুন খসলেই খবর হয়ে যেত। ব্রিটিশ মিডিয়া সদাসতর্ক চোখ রেখেছিল প্রতিটি মুহূর্তে। সেই কঠিন পরীক্ষায় বাংলাদেশ লেটার নম্বর নিয়েই পাস করেছে।
ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) তো বটেই, দেশটির মিডিয়াও বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে স্যালুট করছে। শুধু তা-ই নয়, প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান মন্তব্য করেছে, এরপর অন্যান্য টেস্টখেলুড়ে দলগুলো বাংলাদেশে যাওয়ার ব্যাপারে উত্সাহী হবে।
গুলশান ট্র্যাজেডির পর স্বাভাবিকভাবেই বিদেশি দলগুলো বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে শঙ্কিত ছিল। এই হামলার ঢের আগেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া দুই দফায় তাদের মূল ও বয়সভিত্তিক দল পাঠায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকাও স্থগিত করেছে তাদের নারী ক্রিকেট দলের সফর। হামলার পরে পরিস্থিতি তো আরও জটিল হয়ে উঠেছিল। ইসিবি যদি কোনো কারণে এই সফরে দল না পাঠাত, কে জানে, বাংলাদেশ হয়তো হয়ে যেত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য নিষিদ্ধ এক স্থান।
ইংলিশ মিডিয়ার একটা বড় অংশ থেকে এই সফরের ব্যাপারে সন্দিহান ছিল। তবু ইসিবি তাদের নিরাপত্তা কর্মকর্তার পরামর্শে এই সফর করেছে। আর সেই সফরটার প্রতিটা মুহূর্ত নিখুঁত নিরাপত্তাব্যবস্থাপনা দিয়ে বাংলাদেশ এখন একটা মানদণ্ডই দাঁড় করিয়ে দিয়েছে বলে প্রশংসা করেছে ইসিবি।
দেশটির মিডিয়াও প্রশংসা করছে। ইংল্যান্ড দলকে অনুসরণ করে দেশটির সাংবাদিকেরা এখন ভারতে। সেখান থেকেই গার্ডিয়ানের সাংবাদিক ভিক মার্কস লিখেছেন, ‘ইংল্যান্ড দলের নিরাপত্তাব্যবস্থাপনায় সে সাফল্য পাওয়া গেছে, তাতে আরও বেশি টেস্ট দল বাংলাদেশ সফরে যাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।’
নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর প্রত্যেক কর্মীকেও ইসিবির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে রেগ ডিকাসনের নাম। ইংল্যান্ড দলের নিরাপত্তা দেখভাল করার দায়িত্ব তাঁর। ডিকাসনই সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে সফরটা হয়েছে। ডিকাসনের নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়াই কিন্তু প্রথমে সফর স্থগিত করেছিল। একসময় মেলবোর্ন পুলিশে কাজ করা ডিকাসনের সিদ্ধান্তের ওপর পরোক্ষে কি আস্থা রাখবে অস্ট্রেলিয়াও?
স্থগিত সফরটি পূর্ণ করতে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশে আসার কথা। ইংল্যান্ড দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর চোখ ছিল তাঁদেরও। এমনকি এই সিরিজের মধ্যে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা কর্মকর্তা শন ক্যারল বাংলাদেশে এসে ঘুরেও গেছেন সব নিজের চোখে দেখে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ক্রিকেট পোর্টাল ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ায়’ লন্ডনভিত্তিক ক্রিকেট লেখক ক্রিস স্টোকসের নিজ চোখে দেখা বাংলাদেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে বিশাল এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তাবলয়ের ভেতর থেকে’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে স্টোকস নিজ চোখে দেখা নিরাপত্তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন। যেটি অস্ট্রেলিয়াকেও বাংলাদেশের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিতে ভাবতে সাহায্য করবে। (প্রথম আলো)