চাঁদপুরে কচুয়ায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরীক্ষা-নীরিক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্টসহ চিকিৎসক সংকট বিরাজ করছে। এতে সাধারণে রোগীরা প্রতিনিয়ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের ভোগান্তি ও তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করার চিত্র। এ হাসপাতালে চিকিৎসকের ২১টি পদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে ৯টি পদই শূণ্য। আবার ৯টি শূণ্যপদের মধ্যে ৮টিই হচ্ছে কনসালট্যান্টের পদ। এখানে গাইনী কনসালট্যান্টের পদ দীর্ঘদিন শূণ্য রয়েছে। ফলে মহিলাদের জটিল রোগের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এছাড়া সার্জিকেল কনসালট্যান্টের পদ শূণ্য থাকায় অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। অপারেশন থিয়েটারটিও বর্তমানে বিনষ্ট হয়ে আছে। এটি মেরামত যোগ্য নয়। সম্পূর্ণ নতুন এ্যানেসথেসিয়া মেশিন সরবরাহ করতে হবে।
এক্সরে মেশিনটি ১০ বছর যাবৎ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এক্সরে, রেডিওলজিস্ট ও এক্সরে টেকনিশিয়ান নেই। ইসিজি’র মেশিনটিও বর্তমানে নষ্ট হয়ে আছে। এতে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না।
এমতাবস্থায় পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার জন্য রোগীদের হাতে স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বলা হয়। স্লিপ নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেয় বিভিন্ন প্রাইভেট ডায়াগনস্টি সেন্টার ও ক্লিনিকের দালালরা। প্রাইভেট ক্লিনিকে উচ্চ মূল্যে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা।
সচেতন লোকজনের মতে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সেবা না পাওয়ার কারণেই উপজেলা সদরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বেশকিছু প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে রোগীদের সেবার মান নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ উঠছে।
এ হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে তৃতীয় শ্রেণির মোট কর্মচারীর পদসংখ্যা ১শ’৫১ এর মধ্যে ৪৫টি পদ শূণ্য রয়েছে। শূণ্য পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-স্বাস্থ্য সহকারির ৩০টি পদ ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ৩ টি পদ। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ২২টি পদের মধ্যে ১১টি পদ শূণ্য।
এছাড়া দারোয়ানের পদসংখ্যা ২। আর এ ২’টি পদই রয়েছে শূণ্য। ৪টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে ৩ টি উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের পদ শূণ্য। ৪ টি ফার্মাসিস্ট পদের মধ্যে ৪ টিই শূণ্য। ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ডাক্তার ও ভিজিটরদের বসার মতো চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা নেই।
কনসালট্যান্ট চিকিৎসক সংকট বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন সাখাওয়াত উল্যাহ জানান, কনসালট্যান্ট চিকিৎসকের খসড়া তালিকা প্রণয়ন হয়েছে। তালিকা যাচাই-বাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী দেড় থেকে দু’মাসের মধ্যে কনসালট্যান্টে চিকিৎসকের শূণ্য পদগুলো পূরণ হয়ে যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাহউদ্দিন মাহমুদ চিকিৎসক সংকট ও পরীক্ষা-নীরিক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্টের সত্যতা স্বীকার করে জানান, এসব সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু,১৭ নভেম্বর ২০২০