কচুয়া

নানা সমস্যায় জর্জরিত কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

৫০ সয্যা বিশিষ্ট কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নানা সমস্যা বিরাজ করছে। ফলে রোগীরা হাসপাতাল থেকে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালের প্রবেশ মুখেই বেসরকারী হাসপাতালের দালালদের দৌরাত্ম।

গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল রোগীদের তারা বলে, এখানকার যন্ত্রপাতি নষ্ট, পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল ভুল আসবে, রোগীকে নিয়ে চলে আসেন, বেসরকারী হাসপাতালে, সেখানে সব সময় চিকিৎসক থাকেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা- নিরীক্ষা করা হয়।

এ সব দালালদের সাথে হাসপাতালের কয়েকজন অসাধু ডাক্তারের সখ্যতা রয়েছে বলে ও অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোগীদের ভোগান্তি ও তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানির চিত্র। এ হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিভিন্ন পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। এ কারণে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

হাসপাতালে গাইনী কনসালট্যান্টের একটি পদ দীর্ঘ দিন থেকে শূণ্য রয়েছে। ফলে মহিলাদের জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জুনিয়র কনসালট্যান্ট সার্জারী ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট এ্যানেসথেসিয়া না থাকায় অপারেশন থিয়েটার বন্ধ রয়েছে বছরের পর বছর।

টেকনিশিয়ান না থাকায় এক্সরে করা যাচ্ছে না। আল্ট্রাসোনোগ্রাম করার কোন মেশিন নেই। এতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রোগীদের হাতে ¯িøপ ধরিয়ে দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বলা হয়।

২২ টি নার্স পদের মধ্যে ৩ টি শূন্য। সহকারী নার্সের একটি মাত্র পদ। কিন্তু এটি ও শূন্য। নাইট গার্ডের ২ টি পদই শূন্য। এতে রাতের বেলায় হাসপাতাল অরক্ষিত থাকছে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসকের ২১ টি পদের মধ্যে ১৩ জন আছে। তন্মধ্যে ১ জন রয়েছে ডেপুটেশনে (প্রশিক্ষণে)। ফলে কার্যত ১২ জন চিকিৎসক রয়েছেন।

৪টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১জন করে ডাক্তার থাকার কথা। অথচ কেবল মাত্র রঘুনাথপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার আছে। পাথৈর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডাক্তার অনুপস্থিত রয়েছে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল থেকে। আশরাফপুর ও উপজেলা সদরের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে।

৮ টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ৮ জন সহকারী সার্জনের মধ্যে ১ জন ও নেই। দোয়াটি ও রঘুনাথপুর কেন্দ্রে সহকারী সার্জন ছাড়া ও উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নেই।

জনবল সংকট ছাড়া ও ৫০ শয্যার এ হাসপাতালের পূর্বের ৩১ শয্যার হাসপাতালে দ্বিতীয় তলায় নাইট ডিউটি ডক্টরের রুমের ছাঁদ ও দেয়ালে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাঁদের আস্তর খসে পড়ে মরিচা ধরা রড ভেসে উঠেছে। একটু খানি বৃষ্টি হলে ছাঁদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। ফলে এ কক্ষটি ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী।

২০ শয্যার নতুন স¤প্রসারিত ভবন নির্মাণের ১০/১১ বছর অতিবাহিত হতে না হতেই ছাঁদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে। দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ না করায় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কোয়ার্টার গুলোর জরাজীর্ন অবস্থা। কোন কোন কোয়ার্টার বসবাসের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়া সত্বে ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মচারীরা বসবাস করছে।

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ও জনবল সংকটের কারনে দৈনন্দিন কাজকর্ম দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নেই। বর্তমানে অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তাফা।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিবার কর্মকর্তা ডা. কবির হোসেন জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, এ সংকট সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে ।

প্রতিবেদক : জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯: ৪০ পিএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার
এইউ

Share