কচুয়া

কচুয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন

আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নে ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : কচুয়ার পৌর মেয়র হুমায়ুন কবির প্রধান

সাম্প্রতিক ঘোষিত কচুয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র নতুন কমিটি নিয়ে দলীয় কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী ঘোষিত কমিটি মেনে না নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করে এবং গত ৬ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেয়। এরই প্রেক্ষিতে নবগঠিত কমিটির উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও কচুয়া পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে।

শুক্রবার দুপুরে পৌর মেয়র হুমায়ুন কবির প্রধানের বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

কচুয়া প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসানের পরিচালনায় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক হুমায়ুন কবির প্রধান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ. ন. ম এহসানুল হক মিলন তাঁর ঢাকার বাসভবনে উপজেলা বিএনপির মিটিং ডাকেন। ওই মিটিংয়ে দলের ত্যাগী এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যাদের অবদান বেশি তাদেরকে অপমান করে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয় এবং ছাত্রদল ও যুবদলের ছোট ছোট ছেলেদেরকে নিয়ে একটি পকেট কমিটি করা হয়। যাদের বেশিরভাগই ঢাকায় বসবাস করে। যাদের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সাথে কোনোরূপ যোগাযোগ নেই। যার কারণে এলাকা নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে। এর ফলে কেন্দ্রের ঘোষিত কোনো কর্মসূচি কচুয়ায় পালিত হয়নি। এক কথায় দলীয় কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।”

“এ অবস্থায় গত ৯ অক্টোবর জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক কচুয়া উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন ও ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করে আহবায়ক কমিটি গঠনকল্পে চাঁদপুরে তাঁর বাসভবনে মিটিংয়ের আয়োজন করেন। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই মিটিংয়ে প্রবেশের অধিকার ছিলো না এমন কিছু নেতা-কর্মী জোরপূর্বক মিটিংয়ে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে জেলা নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে উচ্ছৃঙ্খল কর্মীদেরকে মিটিংস্থল থেকে বের করে দিয়ে মিটিংয়ের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়। কিন্তু ওই মিটিংয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়াই সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।”

“পরবর্তীতে কচুয়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম আহবায়কগণ জেলা আহবায়কের পরামর্শক্রমে কচুয়া উপজেলার নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় মিটিং করেন। অতঃপর ঐক্যমতের ভিত্তিতে গত ১৭ অক্টোবর মোঃ হুমায়ুন কবির প্রধানকে আহবায়ক ও শাহজালাল প্রধানকে ১নং যুগ্ম আহবায়ককে ৯১ সদস্য বিশিষ্ট কচুয়া উপজেলা কমিটি এবং নাছির আহমেদ মিলনকে আহবায়ক ও তাজুল ইসলাম তাজিরকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কচুয়া পৌরসভা বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে ওই কমিটির নেতৃত্বে কচুয়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের কমিটির গঠন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া জেলা নেতৃবৃন্দের নির্দেশক্রমে এ কমিটি দলীয় সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে আসছে।”

অপরদিকে, ঘোষিত কমিটির কার্যক্রম স্থগিতাদেশ প্রদানের আবেদন জানিয়ে চাঁদপুরের বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির কমিটির স্থগিতাদেশ দেয়ার জন্য) দু’টি নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করে। আদালত মামলা দুটি শুনানী শেষে খারিজ করে দেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, “মূলতঃ কচুয়ার বিএনপি রাজনীতি একক ব্যক্তি হাতে কুক্ষিগত ছিলো। যার ফলে ত্যাগী নেতাদের দলে মূল্যায়ন করা হয়নি। দলে যাদের অবদান ও ত্যাগ আছে তাদেরকে নিয়ে বর্তমান কমিটি গঠিত হয়েছে।”

হুমায়ুন কবির প্রধান আরো দাবি করেন, ইতোমধ্যে উপজেলা আহবায়ক কমিটির ৭৫জন সদস্য এবং পৌর বিএনপির ৮১জন সদস্য নবগঠিত কমিটির প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। একক ব্যাক্তির রাহুগ্রাস থেকে বেরিয়ে এসে অনাস্থা প্রকাশকারীরাও গঠিত কমিটির প্রতি আস্থা প্রকাশ করবে ও দলের আদর্শ অনুসরণ করে কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, “পরিশেষে আমার আবেদন, কেন্দ্রীয় নির্দেশ মোতাবেক সকল ভেদাভেদ ভুলে আপোষহীন নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলকে সুসংগঠিত করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।”

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শাহজালাল প্রধান ও মিজানুর রহমান পাঠান (ইউপি চেয়ারম্যান), পৌর বিএনপির আহবায়ক নাছির আহমেদ মিলন, যুগ্ম আহবায়ক তাজুল ইসলাম তাজির, আলী হোসেন মজুমদার, জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা ও সদস্য আবুল খায়ের প্রমুখ।

জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া করেসপন্ডেন্ট

||আপডেট: ০৭:২৩ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৫, শুক্রবার

এমআরআর

Share