কচুয়া

কচুয়ায় হাঁসের খামার গড়ে জাকির হোসেনের ভাগ্যবদলের চেষ্টা

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামে বানিজ্যিক ভাবে হাঁসের খামার করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, খামারী হাজী মো. জাকির হোসেন। এ খামার গড়ে তিনি এখন প্রায় সাফল্যের পথে রয়েছেন।

জানাগেছে, কচুয়া উপজেলার নাহারা গ্রামের বাসিন্দা হাজী মো.জাকির হোসেন, মূলত ঢাকার একজন ক্যামিক্যাল ব্যবসায়ী। একসময় তিনি চীন দেশে সফরে গিয়ে বড় হাঁসের খামার দেখতে পায়। সে থেকে নিজ এলাকায় মদিনা হাঁসের খামার গড়ার স্বপ্ন দেখেন।

পরবর্তীতে কোন ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ ছাড়াই ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রথমত ‘সখের বসেই’ নিজ গ্রামে উন্নত পরিবেশে অর্ধকোটি টাকা ব্যায়ে প্রায় ৩শ শতাংশ ভাড়া ও নিজস্ব জমির উপর ৩ হাজার ১শ’৩০ টি জিরো সাইজের হাঁসের বাচ্ছা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে ৮ মাস বয়সী হাঁস গুলো পুরোদমে ডিম দিতে শুরু করেছে।

তার খামারে বর্তমানে দেশি ও বিভিন্ন জাতসহ প্রায় ৩ হাজার হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১২ শ’ ১৫’শ ডিম উৎপাদন হয়ে থাকে। আর সেই ডিম গুলো পাইকারী ৯ টাকা ধরে বিক্রি করছেন। পাশাপাশি পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করে বিক্রি করে অধিক আয় করছেন।

খামারি হাজী মো. জাকির হোসেন জানান, তার খামারে ১০ জন কর্মচারী রয়েছেন। তার খামারে উৎপাদিত ডিম চান্দিনা, নবাবপুর, হাজীগঞ্জ, পালাখাল, সাচার, কচুয়া বাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা তা ক্রয় করে নিয়ে যায়।

বর্তমানে মহামারী করোনায় কিছু প্রভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্য ও যাতায়াতের দিকে খরচ বেশী। করোনার কারনে বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আসতে পারছেন না। বিশেষ করে চট্রগ্রামে ডিম পাঠানো যাচ্ছেনা।

তিনি আরো জানান, অসুস্থ্যতার কারনে ঢাকার ব্যবসা কিছুটা গুছিয়ে পেলেছি। তাই নিজ এলাকায় হাঁসের খামার ও মাছ চাষ করছি। হাঁস গুলোকে প্রতিনিয়ত আপনজন হিসেবে পরিচর্যা করছি। ব্যবসা রানিং হলে আবার ঢাকা চলে যাবো।

রোগ প্রতিরোধক হিসেবে হাঁসগুলোকে বাড়ন্ত অবস্থায় দু’বার বিভিন্ন ভেক্সিন টিকা দেয়া হয়। তবে উন্নত ভাবে চিকিৎসা সেবা দিতে না পারায় হাঁস গুলোর ডাক কলেরা ও ডাক পেলো রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। স্থানীয় প্রানী সম্পদ বিভাগের লোকদের ভালো সহযোগী পেলে হাঁসের রোগ বালাই প্রতিরোধ করা যাবে।

ভবিষ্যতে খামারে আরো হাঁস বাড়িয়ে বিকল্প স্থানে খামার সেট বাড়িয়ে আরো উন্নত করা হবে। আমার এ খামারে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি এতেই আমার স্বার্ককতা।

হাঁসের খাদ্য হলো শামুক। তাই খুলনার বাগেরবাট থেকে হাঁসের খাবারের জন্য শামুক আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

খোলা মেলা সুন্দর পরিবেশ হওয়ায় হাঁসের খামার দেখতে প্রতিদিন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন ভিড় জমায়। তাঁর দেখা দেখী এলাকায় অনেকে হাঁসের খামার গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় আলী আশরাফ বলেন, হাজী জাকির হোসেন একজন সৌকিন ও সফল ব্যবসায়ী। তিনি নিজ এলাকায় হাঁসেন খামার গড়ায় অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।

কচুয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল ইসলাম জানান, হাজী মো. জাকির হোসেন হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন। তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এতে করে হাঁসের খামারে বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তবে আমাদের পক্ষ হতে সর্বদা হাঁসের খামারে তদারকি ও সহযোগিতা করা হবে।

প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু,১ মে ২০২০

Share