জিসান আহমেদ নান্নু, কচুয়া \
চাঁদপুরে কচুয়া উপজেলার চৌহমুনী পূর্ব বাজারে শাহআলমের হোটেলে পুরী খাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৩ সর্টগানের ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে।
এতে পুলিশ, ইউপি সদস্য, ব্যবসায়ীসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। আহতরা হচ্ছে- কচুয়া থানার পুলিশ সদস্য মোঃ রাশেদ বিল্লাহ, জহিরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন, সাবেক ইউপি সদস্য সুমন হোসেন মিয়া, স্থানীয় অধিবাসী ইয়াছিন বেপারী, ইলিয়াস পাটওয়ারী ও শুভ।
আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য রাশেদ বিল্লাহ ও শুভ কচুয়া হাসপাতালে ও স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, রোববার (১৮ মার্চ) উপজেলার বড়ইগাঁও গ্রামের অধিবাসী মোঃ এনতাজ মোল্লার ছেলে মোঃ ফয়সাল চৌমুহনী বাজারে শাহআলমের হোটেলে পুরী খেতে আসে। এসময় ফয়সালকে পুরী দিতে দেরী হলে হোটেলের স্টাফের সাথে তর্কে বির্তকে জড়িয়ে পড়ে এবং এসময় উভয়ের সাথে হাতাহাতি হয়।
পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় বড়ইগাঁও গ্রামের জনৈক্য এক যুবককে চৌমুহনী বাজারে আটক করেছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। পরে মুরাদপুর ও বড়ইগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে সন্ধ্যার পর তুমুল দাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
খবর পেয়ে কচুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে এবং ৭জনকে আটক করে কচুয়া থানায় নিয়ে আসে।
আটককৃতরা হলো- মুরাদপুর গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের পুত্র আল-আমিন (৩৭),বাচ্চু মিয়ার পুত্র রাকিব হাসান (২২),সিরাজুল হকের পুত্র মাইনুল ইসলাম(৪২),নুরুল হক মজুদারের পুত্র বাকি বিল্লাহ মজুমদার(২০),বাচ্চু মিয়ার পুত্র রাসেল হোসেন(২৪), হাজিগঞ্জ থানার তারাপাল্লা গ্রামের শহিদুল্লাহ ছেলে সফিকুল ইসলাম(৩৫),আসমত আলীর পুত্র তারেক(২০)। আটককৃতদের মধ্যে রাকিবুল হাসান কচুয়ার কাদলা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালত সহকারী।
এ ব্যাপারে কাদলা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম লালু জানান, রাকিবুল হাসান বাজারে মারামারির খবর পেয়ে বাজারের ব্যবসায়ী তার ভাইকে আনতে যায়। রাকিবুল হাসান সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম লালু দাবি করেন।
অন্যদিকে বাজারের ব্যবসায়ী তালুকদার ট্রেডার্সের পরিচালক মোঃ শহীদ উল্যাহ জানান, আমার পুত্র সফিকুল ইসলাম হাজীগঞ্জ উপজেলাধীন ৩নং কালোচোঁ উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও দলিল লিখক। সে ওই দিন বাজারে হামলার খবর পেয়ে মোটর সাইকেল যোগে আমার দোকান দেখতে আসে। কিন্তু তাকে অহেতুক আটক করে জেলে পাঠানো হয়েছে।
কচুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান- পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।কিন্তু সংঘর্ষে লিপ্ত লোকজনরা খুবই মারমুখী হয়ে উঠায় ও অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকায় পুলিশ তিন রাউন্ডের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পরবর্তীতে আবারোও শান্তি ভঙ্গের আশংকায় নিবারন মূলক ফৌজদারি কার্যবিধি মোতাবেক ১৫১ ধারায় ৭ জনকে আটক করে কোর্টে সোপর্দ করার মধ্য দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
প্রতিবেদক -জিসান আহমেদ নান্নু