কচুয়ায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

কচুয়া উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামে মধ্যযুগীয় কায়দায় ও যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধুকে মারধরের অভিযোগে কচুয়া মাননীয় আমলী আদালত চাঁদপুরে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হতভাগ্য গৃহবধু মায়ানুর আক্তার স্বামীর সংসার অধিকার ফিরে পেতে বাদী হয়ে তার স্বামী মাসুদ হোসেন,শ্বাশুড়ী হনুফা বেগম ও মামা শ্বশুর বেলাল প্রধানকে আসামী করে সম্প্রতি একটি মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের নিরীহ কৃষক সোলেমান মিয়ার মেয়ে মায়ানুর আক্তারের সাথে একই উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে মাসুদ হোসেনের সাথে ২০২০ সালের ১ মার্চ ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক দু’পরিবারের সম্মতিতে ৩লক্ষ টাকা মোহরানা ধার্যে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের ভবিষ্যতের সুখের কথা চিন্তা করে কৃষক সোলেমান মিয়া ১ভরি ওজনের একটি স্বর্নের গলার চেইন,আটআনা ওজনের একটি স্বর্নের আংটি ও নগদ ৩০ হাজার টাকা মেয়ের জামাইকে প্রদান করেন।

বিয়ের পর তাদের গৃহে আবু বকর সিদ্দিক (২) নামের একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করে। কিছুদিন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও স্বামী মাসুদ হোসেন ব্যবসা করার অজুহাত দেখিয়ে মায়ানুর আক্তারের পরিবারের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা ধার নেয়। ওই টাকা পরিশোধ না করে মাসুদ হোসেন অটো সিএনজি ক্রয়ের অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় ৩লক্ষ টাকা দাবি করে।

এক পর্যায়ে মায়ানুর আক্তার টাকা দিতে অপারগতা করায় তাকে মারধর করে নাবালক সন্তানসহ তার গরীবী পিত্রালয় সফিবাদ গ্রামে পাঠিয়ে দেয়।

গৃহবধু মায়ানুর আক্তার জানান, স্বামী ও শ্বাশুড়ীর শত অত্যাচার নির্যাতন শর্তেও আমি আমার অবুঝ সন্তান নিয়ে স্বামীর সংসার করতে আগ্রহী। বর্তমানে আমার স্বামী মাসুদ হোসেন শ্বাশুড়ীর কু-পরামর্শে আমাকে বিভিন্ন সময় মারধরসহ মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমি আমার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা চাই।

মায়ানুর আক্তারের পিতা কৃষক সোলেমান মিয়া জানান, আমি বৃদ্ধ বয়সে অনেক পরিশ্রম করে অর্থ যোগাড় করে মেয়ের সুখের জন্য জামাইয়ের পরিবারকে প্রদান করি। কিন্তু তাতেও আমার মেয়ের কপালে সুখ জোটেনি।

বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী বারবার চেষ্টা করেও মেয়ের স্বামীর পক্ষের লোকজনকে সমঝোতা করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, মেয়ের শ্বশুর পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় নানান ভাবে আমাকে হয়রানি করছে এবং শুনেছি আমার বাড়িতে মেয়ে ও নাতিকে রেখে জামাই মাসুদ হোসেনকে তার মা হনুফা খাতুন গোপনে বিদেশ পাড়ি দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

আমি বিষয়টি সমাধানে সকলের সহযোগিতা চাই। এদিকে অভিযুক্ত মাসুদ হোসসেনের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কচুয়া প্রতিনিধি, ৬ আগস্ট ২০২২

Share