কচুয়ায় গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নামে একটি ভুয়া এনজিও সংস্থা গ্রাহকদের ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় শত শত গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়ে অর্থ ফেরত পেতে এনজিও অফিসের দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জানা গেছে, কচুয়া পৌরসভাধীন মাছিমপুর গ্রামে মো: আনোয়ার উল্যাহ’র কাজী মঞ্জিলের ২য় তলায় সম্প্রতি ৪টি রুম ভাড়া নেয় গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট নামের একটি এনজিও সংস্থা। অফিসে কিছু চেয়ার টেবিল ও ৩/৪জন স্থানীয় কর্মী অফিসে বসিয়ে রেখে দু’জন ফিল্ড কর্মী সফিবাদ,পালাখাল,দোয়াটি,রহিমানগরসহ বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে ঋণ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
১৫ নভেম্বর রোবাবার ওই কার্যালয়ে ঋণ নিতে এসে অফিসটি তালা ঝুলানো অবস্থায় দেখতে পায় গ্রাহকরা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো হচ্ছে- সফিবাদ গ্রামের নিরীহ আব্দুল হান্নান,বাতেন পাঠান,হাসিনা আক্তার,হুমায়ুন কবির, ইসমাইল, ছানাউল্যাহ, আকবর,রোশানারা,পালাখাল গ্রামের উম্মে হানি, আসমা, খুকি বেগম, নুরজাহান, মায়ানুর, ছিদ্দিক,মোস্তফা কামাল,ফাহিমা আক্তার,কবির হোসেন,মাহমুদ,নাজমা,আয়েশাবেগম,দোয়াটি গ্রামের পাখি, কুলছুমা, ময়না, হাসিনা, রানু, বেবী, মানছুরা, নাছিমাসহ আরো অনেকে।
সফিবাদ গ্রামের আব্দুল হান্নান জানান, গত সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পলাশ ও ফারজানা আক্তার নামের দুই ব্যক্তি আমাদের বুঝিয়ে ঋণ দেয়ার কথা বলে ঋণ প্রস্তাববাবদ ২০,১৫,১০ ও ৫ হাজার টাকা করে প্রায় শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে আসে। রোববার তালা ঝুলানো দেখতে পেরে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি। এসময় তারা তাদের দেয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,নরসিংদী বেলাব এলাকার পলাশ নামের এক যুবক কচুয়ার মাছিমপুর এলাকায় অফিস নিয়ে ৪/৫জন ফিল্ড কর্মী নিয়োগ দিয়ে তার এক নারী কর্মী ফারজানা আক্তারের মাধ্যমে মানুষের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সুচতুর ওই নারী ফারজানা আক্তারের বাড়ি গাজীপুর এলাকা হলেও তিনি হাজীগঞ্জে এক খালার বাড়িতে থেকে কচুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানুষকে ঋণ দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মাছিমপুরে ভাড়া নেয়া বাড়ির মালিক মো: আনোয়ার উল্যাহ জানান, নরসিংদী এলাকার পলাশ নামের এক ব্যক্তি নিজেকে গ্রামীণ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সম্প্রতি আমার এখানে চারটি কক্ষ তিন বছরের চুক্তিতে ৬ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া নেন। কোনো প্রকার অগ্রিম টাকা ও কাগজপত্র না দিয়ে হঠাৎ তারা অফিসে তালা ঝুলিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে।
কচুয়া উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো: দেলোয়ার হোসেন জানান, এনজিও’র সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা এনজিও ব্যুরো নিয়ন্ত্রন করে থাকেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপায়ন দাস শুভ জানান, বিষয়টি জানা নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্থ কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিবেদক:জিসান আহমেদ নান্নু, ১৫ নভেম্বর ২০২০