তরুণ উদ্যোক্তা জিয়া উদ্দিন মজুমদার। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে চাঁদপুরের কচুয়ার সাচারের বায়েক নিজ এলাকায় গড়ে তুলেছেন গরু খামার। এতে তিনি যেমন উদ্যোক্তা হয়েছেন, তেমনি কর্মস্থান হয়েছে গ্রামের খেটে খাওয়া কয়েকজন শ্রমিকের। বেশ কিছুদিন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। অবশেষে চাকরির পিছে না ছুটে নিজেই উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য। ঠিক তখনই নিজ বায়েক এলাকায় গড়ে তোলেন রেনেঁসা এগ্রো ফার্ম নামে একটি গরু খামার।
ফার্মটির পরিচালক জিয়া উদ্দিন মজুমদার বলেন, ২০১৮ সালে সাচার-গৌরিপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে বায়েক গ্রামে রাস্তার উত্তর পাশে মনোরম পরিবেশে একটি গরুর ফার্ম করা হয়। শুরুতে প্রায় বিভিন্ন জাতের শতাধিক গরু নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে ২৮টি গরু রয়েছে। ওই খামারে গরুর জন্য ভালো মানের খাবার পরিবেশন করছি এবং মাঠের সবুজ ঘাস খেতে দিচ্ছি। এখানে হাইব্রিড কোনো খাবার বা ইনজেকশন পুশ করানো হচ্ছে না। তাই শারীরিক দুর্বল গরুগুলো এখন চমৎকার গঠনে বেড়ে উঠেছে। আমরা আশা করছি, আসছে কোরবানি ঈদে এসব গরু বাজারজাত করব এবং বাজারমূল্যে বিক্রি করলেও আমরা অধিক লাভবান হব।
ফার্মটিতে বিভিন্ন জাতের বর্তমানে ২৮টি ষাঁড় গরু রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে দেশীয় গরুসহ শাহীওয়াল, সিন্দি, বলদ, অস্ট্রেলিয়ান ও নেপালি। কমপক্ষে ২ বছর পর্যন্ত লালন পালন করা হবে এসব ষাঁড়। দেশের বিভিন্ন বাজার থেকে কমমূল্যে সংগ্রহ করেছেন এসব গরু। দেশীয় খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে নিয়মিত। খামারের সব গরুই পর্যাপ্ত বয়সের হয়েছে। আসছে কোরবানি ঈদেই এগুলো বাজারজাত করা হবে বলে জানা গেছে। জিয়া উদ্দিন মজুমদার বাবলু ওই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত সিরাজুল ইসলাম মজুমদাদের কনিষ্ট পুত্র। রেনেঁসা এগ্রো ফার্ম ব্যতীত তাদের সাচার বাজারে রয়েছে রেনেঁসা মেডিকেল সেন্টার। এছাড়া রেনেঁসা সমবায় সমিতি,রেনেঁসা মৎস খামার ও রেনেঁসা মিশ্র ফল বাগান।
খামারের উদ্যোক্তা মো. মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, অন্যের ফার্মে চাকরি না করে নিজেই ফার্ম তৈরি করেছি। এর মাধ্যমে নিজের পরিবার স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েক জনকে এই ফার্মে কর্মকংস্থানের ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরো বলেন, দেশে মাংসের চাহিদা মেটাতে আমরা গরু খামারের বিষয়টিই বেছে নিয়েছি। ইন্ডিয়া থেকে গরু না এলে আমাদের বাজার পূর্ণতা পেত না। এখন দেশে উৎপাদিত গরুতেই বাজার পূর্ণ হচ্ছে। আপনার জেনে ভালো লাগবে, আমাদের খামারের গরু এরই মধ্যে অনেকেই পছন্দ করে রেখেছে। ঈদে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, গ্রামে গ্রামে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে, শিক্ষিত তরুণা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে এবং দেশেও মাংসের চাহিদা পূর্ণ হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে মাংসের চাহিদা মেটাতে আমরা গরু খামারের বিষয়টিই বেছে নিয়েছি। ইন্ডিয়া থেকে গরু না এলে আমাদের বাজার পূর্ণতা পেত না। এখন দেশে উৎপাদিত গরুতেই বাজার পূর্ণ হচ্ছে। আপনার জেনে ভালো লাগবে, আমাদের খামারের গরু এরই মধ্যে অনেকেই পছন্দ করে রেখেছে। ঈদে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, গ্রামে গ্রামে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে, শিক্ষিত তরুণা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে এবং দেশেও মাংসের চাহিদা পূর্ণ হবে।
ফার্মের দায়িত্বরত শ্রমিক সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাজাতকরন করা হচ্ছে। তবে কোরবানি ঈদে এই ফার্মের গরু গুলো বিক্রি করা হবে বলেও জানান তিনি।
কচুয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাখাওয়াত হোসেন সুমন বলেন, আমাদের তরুণরা যখন চাকরির পেছনে ছুটছে। তখন মেঘনার তরুণরা উচ্চশিক্ষা লাভ করে গ্রামে এসে কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে। শিক্ষিত তরুণদের এমন উদ্যোগ গ্রাম ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে অংশীদার হচ্ছে। আমি তরুণদের বলব, তোমরা যে কোনো ভালো উদ্যোগে আমাকে কাছে পাবে। শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হয়ে নিজেকে এবং সমাজকে সমৃদ্ধ করবে সেটাই প্রত্যাশা করছি।
প্রতিবেদক: জিসান আহমেদ নান্নু, ২৬ জুন ২০২২